চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে “শেখ রাসেল দিবস-২০২৩” উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আজ ১৮ই অক্টোবর (বুধবার) ২০২৩ খ্রি. বেলা ১২.২০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম মহোদয়। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ.এইচ. রাশেদুল হোসেন এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে মেকাট্রনিক্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহাম্মদ, প্রভোস্টগণের পক্ষে শামসেন নাহার খান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম ও স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জনাব বিশ^জিৎ ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানমালা সঞ্চালনা করেন উপাচার্য মহোদয়ের দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) জনাব মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ রাসেলের জীবনের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ রাসেল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন চুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা হাফেজ ক্বারী নুরুল্লাহ। এর আগে বেলা ১২:০০ ঘটিকায় শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সূচনা করেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এ সময় শেখ রাসেল হলের উদ্যোগে জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কাটা হয়। পরে শেখ রাসেল হল সংলগ্ন এলাকায় স্মারক বৃক্ষরোপণ করা হয়। এরপর শেখ রাসেল হলের সামনে থেকে এক র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। বিকাল ৪:০০ ঘটিকায় চুয়েট ক্লাবে শিশুকিশোরদের তৈরি দেয়ালিকা প্রদর্শন এবং সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, “মানবসভ্যতার ইতিহাসে যেকোনো গণহত্যাই নিন্দনীয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম গণহত্যা হয়েছিল ১৫ই আগস্ট। একই পরিবারের সবাইকে হত্যা করার মতো ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ইতিহাসই থমকে গিয়েছিল। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী দেশকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছিল। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।” চুয়েট ভিসি আরও বলেন, “শেখ রাসেল ছিল দুরন্ত ও চৌকষ শিশুদের উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি। শেখ রাসেলের দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শেখ রাসেলের মতো দেশের আর কোনো শিশু যেন অকালে ঝরে না পড়ে। তাদের প্রতিভা বিকাশের পথে যেন প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে যেন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এগিয়ে আসতে পারি। বর্তমান প্রজন্ম অনেকবেশি প্রযুক্তি ও ডিভাইস-নির্ভর হয়ে গেছে। প্রযুক্তির অপব্যবহারের বিষয়ে সন্তানদের সচেতন করে তুলতে হবে। আমাদের দেশে এখন তেমন শিশুতোষ নাটক-সিনেমা হচ্ছে না। শিশুদের সুস্থ বিনোদনের অভাব দেখা যাচ্ছে। আগের মতো খেলাধুলার জন্য মাঠ ও পরিবেশ নেই। শিশুদের মনন ও প্রতিভা বিকাশের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।”