নান্দাইলে হাইত উৎসবে মাছ শিকারিদের ঢল

160

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে জড়ো হতে শুরু করেন মানুষ। কারও হাতে পলো, কারও হাতে জাল, উদ্দেশ্যÑমাছ শিকার। অনেকে এসেছেন মাছ ধরা দেখতে। আজ শনিবার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ও শেরপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বাপাইল বিলে মাছ শিকারিদের মিলনমেলা ‘হাইত উৎসবে’ দেখা যায় এমন চিত্র।

হাইত উৎসবে স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন মানুষও অংশ নেন। সকাল ১০টা পর্যন্ত চলে বাপাইল বিলের এই মাছ শিকারের উৎসব।

এলাকাবাসী জানান, এক সপ্তাহ আগে থেকেই হাইত উৎসবে মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়। মাইকিং শুনে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই মাছ শিকারিরা জড়ো হতে থাকেন। মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নে খাল-বিল, জলাশয়ে বছরের এ সময় পানি কমে হাঁটু সমান, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোমর সমান হয়ে এলে ‘হাইত উৎসবে’র আয়োজন করেন এলাকার মানুষজন। দিনক্ষণ ঠিক করে এলাকায় মাইকিং করা হয়।

শনিবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, হাইত উৎসবে পলো, ডুবা ফাঁদ, চাঁইসহ বিভিন্ন ধরনের জাল ও সরঞ্জাম নিয়ে মাছ শিকার করতে বিলে নেমে পড়েছেন হাজারের বেশি মাছ শিকারিরা। বিলের দুপাশে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নারী-পুরুষ হাইত উৎসবের মাছ শিকার দেখতে এসেছেন। সব মিলিয়ে বিল ও আশপাশের এলাকায় আনন্দমুখর এক পরিবেশের তৈরি হয়। তবে এ বছর বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় মাছ শিকারিরা বেশি মাছ ধরতে পারেননি।

পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর উপজেলার বাসিন্দা মো. তারিফ হাসান বলেন, হাইত উৎসবে মাছ শিকার করতে এসে তেমন মাছ পাইনি। তবে সবার সঙ্গে মাছ ধরতে বিলে নেমে ভালো লাগছে।

আরেক মাছ শিকারি মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মামুন আহমেদ বলেন, আগের মতো হাইত উৎসবের আনন্দ নেই। বর্তমানে কিছু কিছু অঞ্চলে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রামের মুরব্বিরা হাইত উৎসবের আয়োজন করেন। তবে মাছ শিকারিরা তেমন মাছ শিকার করতে পারেননি।

শেরপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, অনেক বছর আগ থেকেই এখানে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে হাইত উৎসবের আয়োজন করা হয়ে আসছে। ১০-১২ মাইল দূর থেকেও মাছ শিকার করতে অনেকে এসেছেন।