সুবর্ণচরে মাচায় লাউ চাষে কৃষকের সফলতা

163

মন্দা ভাবের কারণে ছেড়ে দিয়েছিলেন ব্যবসা। দিশাহারা কালাম ব্যাপারী তখন চোখে সর্ষে ফুল দেখছিলেন। উপায়ন্তর না পেয়ে সবজি চাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। আর তারই ফলশ্রুতিতে মাচায় লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ৮নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কালাম ব্যাপারী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় সারি সারি সবুজ পাতা। আর একটু নিচের দিকে তাকালে দেখা মিলছে সারি সারি লাউ। মাচায় লাউ চাষ বিষয়ে জানতে চাইলে কালাম ব্যাপারী জানান, এই বছর দেড় একর জমিতে মাচায় লাউ চাষ করে আয় করছেন প্রায় ৩ লাখ টাকারও বেশি। মাত্র কিছু টাকার পুঁজি দিয়ে এত টাকা আয় করবেন কখনও কল্পনা করেননি তিনি।

কালাম ব্যাপারী আরও বলেন, ‘তাই নিজের শ্রম ঘাম আর আপ্রাণ চেষ্টার মানসিকতা নিয়ে আমি ব্যবসা বাদ দিয়ে সবজি চাষে ঝুঁকেছি। অল্প অল্প করে সফলতার মুখ দেখতে দেখতে আমি এই বছর লাউ চাষে ভালো সফল হয়েছি। আসলে আধুনিক প্রযুক্তিতে লাউ চাষ করে কৃষকদের লাভবান হওয়া সম্ভব। অন্য ফসলে পুঁজি বেশি আর তেমন লাভ ও হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘লাউ উৎপাদনে সাধারণত অন্য ফসলের তুলনায় পরিশ্রম কম ও ফলন ভালো হয়। এতে রাসায়নিক ও কীটনাশক সারের ব্যবহার বেশি না থাকায় ক্ষতিকর কোনো প্রভাব নেই। ঠিকমতো পরিচর্যা করলে আরও লক্ষাধিক টাকার লাউ বিক্রি করা সম্ভব হবে। এছাড়া পতিত জমিতে শিম, করলা, বেগুনসহ নানা ধরনের সবজি চাষ করেছি। এতে করে প্রতিনিয়ত আমার ফসলি জমিতে ৪-৫ জন কামলা কাজ করে। এতে করে ওই পরিবারগুলোও ভালো চলছে। তাই সবজি চাষে শুধু নিজের লাভ নয়, অন্যদেরও পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকার হাতিয়ার বলে আমি মনে করি।’

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, লাউ চাষে এত লাভ আমরা আগে জানতাম না। এই বছর আমাদের এলাকার কালাম ব্যাপারী লাউ চাষ করে ভালোই সফল হয়েছেন। আগামীতে আমরাও আমাদের পতিত জমিতে লাউ চাষ করব। এ ব্যাপারে সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুণ অর রশিদ বলেন, সুবর্ণচরের মাটিগুলো উর্বর থাকায় এখানে যেকোনো ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। আমরা কালাম ব্যাপারীকে নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করছি। যার ফলে আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী এই বছর লাউ চাষে সফল হয়েছেন। আমরা আগামী বছরে শীত মৌসুমে আরও কয়েকজন কৃষককে লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ করব।