আগামীকাল থেকে রাজধানী ঢাকাতে ‘ট্রাক সেল’ শুরু হবে। ২৫ থেকে ৩০টি স্থানে এই ট্রাক সেল হবে। সেখান থেকে যে কেউ দুই কেজি ডাল, আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
আজ (সোমবার) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য সচিব বলেন, টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে ঢাকাতে ১৩ লাখ পরিবারকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি মঙ্গলবার থেকে ঢাকাতে ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হবে। এতে নতুন করে আরও ৯ হাজার পরিবার যোগ হবে। প্রতিটা ট্রাক থেকে ৩০০ জন এই পণ্যগুলো পাবে। শুক্র-শনিবার বাদে প্রতিদিন বিক্রি হবে। তবে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হবে।
তিনি বলেন, ট্রাক সেলে যে কেউ ২ কেজি ডাল, আলু, পেঁয়াজ, ২ লিটার সয়াবিন তেল নিতে পারবে। এই মুহূর্তে চিনি দেওয়া যাচ্ছে না। চিনি পাওয়া গেলে দেওয়া হবে। এতে প্রতি কেজি ডাল ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটার, পেঁয়াজ ৫০ টাকা ও আলু ৩০ টাকা কেজি দরে দেওয়া হবে।
সচিব বলেন, সরকার ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য দিচ্ছে। প্রতিটি পণ্য অর্ধেক দামে দেওয়া হয়। আজ থেকে সারা দেশে জেলা প্রশাসকরা ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি কার্যকর করবেন।
সপ্তাহে কতদিন বিক্রি হবে জানতে চাইলে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, শুক্র-শনিবার বাদে প্রতিদিন বিক্রি হবে। আমি যদি সংগ্রহ করতে পারি, আমি বিক্রি করব। তবে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হবে। কারণ পুরো ঢাকাতে ৩০টি ট্রাক দিয়ে কভার করতে হবে। যাতে সব মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়।
তিনি বলেন, ট্রাকসেলে যে কেউ ২ কেজি ডাল, আলু, পেঁয়াজ, ২ লিটার সয়াবিন তেল নিতে পারবেন। এই মুহূর্তে চিনি দেওয়া যাচ্ছে না। চিনি পাওয়া গেলে দেওয়া হবে। এতে প্রতি কেজি ডাল ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটার, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা কেজি দরে দেওয়া হবে।
টিসিবি কার্ডধারীদের এখন আলু দেওয়া হবে না জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, কারণ জেলা প্রশাসকরা সোমবার থেকে সরকারি দাম অর্থাৎ ৩৬ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি নিশ্চিত করবে। তেল, চিনি, ডাল, আলু এসব পণ্য আমদানি করতে যেন ডলারের সমস্যা না হয় সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকার ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য দিচ্ছে। প্রতিটি পণ্য অর্ধেক দামে দেওয়া হয়।
নতুন করে এই ট্রাকসেল কতদিন চলবে– এমন প্রশ্নের জবাবে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আগে টিসিবি যে ট্রাকসেল করত, সেখান থেকে আমরা কিন্তু বেশি মানুষকে দিতে পারতাম না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে দেশে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেল। সেটা সামাল দেওয়ার জন্য তখন এক কোটি পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে কার্ড করে দেওয়া হয়। আমরা এখনও সেভাবে তাদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এখন সারা দেশের মানুষ এই সুবিধাটা পাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সব জেলায় এই কার্ড বিতরণ করা হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্য আমরা কমাতে পারিনি। আসলে আমরা কমাতে চাই। ঢাকা শহরে কিছু ভাসমান মানুষ আছে যাদের টিসিবির কার্ডের আওতায় আনতে পারিনি। সেজন্য ঢাকা শহরে ট্রাকসেল দিতে যাচ্ছি। আশা করি, এটা ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা যাবে। কাল থেকে ২৫ থেকে ৩০ ট্রাকে সেল শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে খাদ্যসামগ্রী যদি বেশি সংগ্রহ করতে পারি, তাহলে ট্রাকসেলের সংখ্যা আরও বাড়বে। কতদিন চলবে সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। এটার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি আশা করি, জানুয়ারি থেকে এসব পণ্যের দাম কমে আসবে। যদি যথেষ্ট পরিমাণ কমে আসে তাহলে ট্রাক সেল থাকবে না। যদি আমরা মনে করি চালানো দরকার তখন চলবে।
কার্ডধারীরা কী ট্রাক থেকে কিনতে পারবেন– এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, যারা কার্ডধারী তারা এখান থেকে পণ্য নিতে পারবেন না। আমরা কার্ডধারীদের অনুরোধ জানাব তারা যেন এখানে না আসেন।
টিসিবির কার্ড বাড়ানো হবে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের টিসিবির সক্ষমতা, আমদানির পরিস্থিতি কি রকম সেটার ওপর নির্ভর করে কার্ড বাড়ানো হবে কি না। এক কোটি পরিবার থেকে আপাতত এটা বাড়ানোর সম্ভবনা নেই। যদি প্রয়োজন হয় টিসিবির সক্ষমতা থাকলে বাড়ানো হবে। আমরা বর্তমানে চিনি দিতে পারছি না। এজন্য কার্ড বাড়ানোর কোনো চিন্তা নেই। তাই ট্রাকসেলের মাধ্যমে চেষ্টা করব ঢাকাকে কাভার করতে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, জানুয়ারিতে আমাদের দেশি পণ্য যখন বাজারে চলে আসবে, তখন দাম নিম্নমুখী থাকবে। আর আমদানি পণ্য নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর। দুটি বিষয় আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে– এক ডলারের দাম ও আন্তর্জাতিক পণ্যের দাম কি হচ্ছে।