বরগুনায় জেলার ৬টি উপজেলায় সৌখিন ও বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সরকারি হিসেব মতে বরগুনায় কেবল বাণিজ্যিকভাবে গত ২/৩ বছর ধরে ২০ হেক্টরের বেশি জমিতে ড্রাগন ফলের সফল আবাদ হচ্ছে। তাছাড়া সৌখিনভাবে ও পারিবারিক চাহিদা মেটাতে স্থানীয়রা বাড়ির আঙ্গিনা ও ছাদে ড্রাগনফলের চাষাবাদ করছেন।
জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তাদের সহযোগিতায় আরও ৯ একর জমিতে ৩২টি বাগান তৈরির কাজ চলছে। জেলার একজন সফল চাষি আমতলী উপজেলার ইলিয়াস। ৫ বছরের প্রবাস জীবন থেকে ফিরে আড়াই একর জমিতে ড্রামের মধ্যে, সিমেন্টের খুঁটির ওপর বিশেষ পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। সে একই জমিতে ড্্রাগনের পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করতে শুরু করেছে মাল্টা, থাই পেয়ারা, উন্নত জাতের লেবু, আম ও সবেদাসহ নানা ফলের। জেলা জুড়ে সারা ফেলেছে ইলিয়াসের ড্রাগন বাগান এবং স্থানীয়রা দেখছেন অনুপ্রেরণা হিসেবে।
ইলিয়াস ড্রাগনের নানা প্রজাতির ড্রাগন কাটিং রোপণ করেছে। বাগানটিতে বর্তমানে সবুজ গাছে শোভা পাচ্ছে গোলাপি, লাল আর সবুজ ফল। পাশাপাশি রয়েছে মাল্টা, থাই পেয়ারা, উন্নত জাতের লেবু, আম ও সবেদাসহ নানা ফলের চারা।
ড্রাগন চাষের আরেক সফল চাষি বরগুনা সদর উপজেলার আজিজিয়াবাদ গ্রামের উজ্জ্বল মাস্টার। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ লাখ টাকা খরচ করে ২ একর জমিতে ১ হাজার ১২৫টি পিলারে সাড়ে ৬ হাজার ড্রাগনের চারা রোপণ করেন। তিনি প্রতি কেজি ড্রাগন পাইকারি বিক্রি করেন ২৬০-৩০০ টাকায়। মাসে দু’বার ড্রাগন ফল কাটা হয়। বর্তমানে প্রতিটি গাছে ড্রাগন ফল ধরেছে। ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন উজ্জ্বল।
আমতলী পৌরশহরের গৃহবধু সীমা মজুমদার শখ করে তার বাগানে ১০টি ড্রাগ্রন চারা লাগিয়েছিলেন। এখন তারা বাজার থেকে ড্রাগন ফল কিনতে হয় না। এভাবেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম তার বাড়ির ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ করে পারিবারিক চাহিদা মেটাচ্ছেন।
জেলা কৃষি বিভাগের সহকারি পরিচালক রেজাউল করিম বাবু জানান, আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে আগ্রহী কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। ক্রমশ: বরগুনায় বাড়ছে ড্রাগন চাষ; আর তাদের সহযোগিতায় কাজ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এসএম বদরুল আলম জানিয়েছেন, ড্রাগন লাভজনক ফল, উচ্চমূল্যের ফসল। বাজারে ড্রাগন ফলের প্রচুর চাহিদা থাকায় আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষি। আমরা প্রতিনিয়ত ড্রাগন চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি। কৃষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও অব্যাহত আছে।