উত্তরের কৃষিনির্ভর জেলা পঞ্চগড় দেশের চা উৎপাদনে দ্বিতীয় অঞ্চল হিসেবে পরিণত হয়েছে। চা চাষের পর পঞ্চগড়ে কৃষিতে নতুন স্বপ্ন জাগাচ্ছে কফি চাষ। গত আড়াই বছর আগে সুপারি বাগানে সাথী ফসল হিসেবে রোপণ করা কফির চারাগুলোয় এবারে এসেছে কফি ফল। বাগান থেকে কফি ফল পরীক্ষামূলকভাবে কর্তন করতে শুরু করেছেন কৃষকরা। সহজে ছায়াযুক্ত স্থানে স্বল্প খরচে কফি চাষ করে কয়েকগুণ লাভের আশা করছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগামীতে কফি চাষ করে বাড়তি আয় করে স্বাবলম্বী হওয়ার নতুন স্বপ্ন দেখছেন পঞ্চগড়ের কফিচাষি ও বাগান মালিকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাগানগুলোর গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে কফি ফল। রোবাস্টা জাতের কফি চাষ শুরু হয়েছে পঞ্চগড়ে। জেলার মাটি ও আবহাওয়া কফির জন্য উপযোগী হওয়ায় সুপারিসহ বিভিন্ন বাগানের ছায়াযুক্ত ফাঁকা জায়গায় চাষিরা গড়ে তুলেছেন কফি বাগান। আড়াই বছর আগে এই জেলার তিনটি উপজেলায় ৪৭ কৃষক কফির চাষ শুরু করেন। চারা রোপণের পর দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যেই ফল আসা শুরু হয় কফি গাছগুলোয়। এখন অনেক বাগানে ফল পাকা শুরু হয়েছে। প্রতি বিঘা বাগানে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার কফি বিক্রির সম্ভাবনা দেখচ্ছেন চাষিরা।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা এলাকার কফিচাষি আব্দুল হালিম জানান, ২০২১ সালের শেষের দিকে কৃষি বিভাগের কফি ও কাজু বাদাম গবেষণা উন্নয়ন সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় চাষিদের কফিবীজ ও নানা পরামর্শ দেয়া হয়। কফি চাষের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানের প্রয়োজন হয়। যেখানে ছায়া থাকে সেখানে কফি ভালো হয়। বাড়তি কোনো জমি প্রয়োজন হয় না। অন্য যেসব বাগান রয়েছে, সেখানে সাথী ফসল হিসেবে কফি চাষ করা যায়। কফি চাষে তেমন কোনো পরিচর্যারও প্রয়োজন হয় না। পঞ্চগড়ে কফি চাষের সম্ভাবনা থাকায় কৃষি বিভাগের উদ্যোগে এই কফি চাষ করা হয়। এই কফি ফল কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে কফি তৈরি করা হয়।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম জানান, পঞ্চগড়ে চা চাষের সাফল্য অর্থনৈতিকভাবে জেলার চাষিদের এনে দিয়েছে প্রেরণা। মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই জেলায় কফি চাষ সফলতা পেলে এটি কৃষি অর্থনীতিতে উম্মোচন করবে আরেকটি নতুন দিগন্ত।