পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা মৌসুম শেষ হতে না হতেই উঁচু জায়গাগুলোয় তরমুজের আগাম চাষ শুরু করেন কৃষকরা। আর তাই এরই মধ্যে বাজারে চলে এসেছে আগাম তরমুজ। কৃষকরা ক্ষেত থেকেই তরমুজ খুচরা বিক্রি শুরু করেছেন। আগাম তরমুজে ভালো দাম পেয়ে সন্তুষ্ট কৃষকরা। গতকাল সোমবার পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে কুয়াকাটা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসংলগ্ন বালুর মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উৎপাদিত আগাম তরমুজের রমরমা বিক্রি চলছে। তরমুজ কিনতে স্থানীয়দের পাশাপাশি ভিড় করছেন কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরাও। গরম শুরু হতে না হতেই তরমুজ পেয়ে খুশি সাধারণ ক্রেতারা। সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি তরমুজ ৫০ থেকে ৩০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার কলাপাড়ায় আগাম তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর চাহিদা বেশি থাকায় মৌসুমের শুরুতেই ক্ষেত থেকে তরমুজ কিনে নিচ্ছেন ব্যাপারীরা। একইসঙ্গে বাম্পার ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় তরমুজকে ঘিরে নতুন স্বপ্নে বিভোর চাষি ও ব্যাপারীরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষেতগুলো এখন তরমুজে সয়লাব। দ্রুত বাজার ধরতে চলছে দিনরাতের পরিচর্যা। অনুকূল পরিবেশ কাজে লাগিয়ে অধিক মুনাফার আশা করছেন চাষিরা।
কুয়াকাটার আলীপুরের কৃষক মনির হোসেন বলেন, এবছর ২৫ একর জমিতে আগাম তরমুজ এর চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রতিদিন আট কৃষক কাজ করছেন আমাদের তরমুজ ক্ষেতে। এ বছর ভালো ফলন পাব বলে আশা করছি। এরই
মধ্যে গাছে পরিপূর্ণ ফল চলে এসেছে এবং ক্ষেতেই খুচরা বিক্রি শুরু করে দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যেই পাইকারি বিক্রি শুরু করব আমরা। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে ৫০ লাখ টাকার ওপরে বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
তরমুজ কিনতে আসা পর্যটক মাওলানা হাসান মাহমুদ বলেন, আমরা পার্শ্ববর্তী উপজেলায় তাবলীগ জামাতে এসেছি। মূলত কুয়াকাটার এক সাথী ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলাম। হঠাৎ চোখে পড়ল ক্ষেতের পাশেই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। যদিও এখনও তরমুজের পরিপূর্ণ সিজন শুরু হয়নি, তাই খাওয়ার জন্যই মূলত নেমেছি।
তরমুজ কিনতে আসা স্থানীয় যুবক আলী হায়দার বলেন, বাজারে প্রথম তরমুজ আসায় আমি কিনতে এসেছি। আর এখানে একদম ক্ষেতের পাশেই বিক্রি করা হচ্ছে, স্থানীদের পাশাপাশি কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরাও এখান থেকে তরমুজ সংগ্রহ করছেন। গরম শুরু হতে না হতেই তরমুজ খেতে পেরে ভালোই লাগছে। আর দামও নাগালের মধ্যেই আছে।
এ বিষয় কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার আরাফাত হোসেন বলেন, এ বছর উপজেলায় মোট এক হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ফলন মোটামুটি ভালো। কিন্তু কিছুদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের। তবে বর্তমানে গাছে যে পরিমাণ ফল ধরেছে, তাতে আমরা আশা করছি কৃষকরা ভালো দামে তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। এরই মধ্যে বাজারে আগাম তরমুজ বিক্রি শুরু হয়ে গেছে।