রেশন: বয়স ও উপযোগিতা অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ বরাদ্দকৃত খাদ্যকে রেশন বলে।
সুষম খাদ্য: মুরগির জাত, বয়স, ওজন ও উপযোগিতানুসারে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজনীয় পরিমাণ ও অনুপাত সমন্বয়ে তৈরি খাদ্যকে সুষম খাদ্য বলে।
সম্পূর্ণ খাদ্য: সুষম খাদ্যের সাথে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, এনজাইম, এমাইনো-এসিড ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ করে খাদ্যের গুণগতমান, উপযোগীতা ও সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। এই খাদ্যকে সম্পূর্ণ খাদ্য বলে।
খাদ্য উপকরণ মজুদ: শুষ্ক ও আর্দ্রতামুক্ত অবস্থায় খাদ্য উপকরণ মজুদ করতে হবে ।
পুষ্টি অনুসারে খাদ্য উপকরণের নাম: নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদান যে খাদ্য উপকরণের মধ্যে বেশি পরিমাণ থাকে তাকে সেই জাতীয় খাদ্য বলে। যেমন: সয়াবিন মিল ও আমিষ জাতীয় খাদ্য।
আমিষ জাতীয় খাদ্য উপকরণ: প্রাণীজ আমিষ-ফিস মিল, মিট ও বোন মিল, ব্লাড মিল, ফিদার মিল ইত্যাদি। উদ্ভিদ আমিষ-সয়াবিন মিল, তিল খৈল, ও অন্যান্য তৈলবীজের খৈল।
শর্করা জাতীয় খাদ্য: গম, ভূট্টা, সাইলো ইত্যাদি।
খনিজ জাতীয় খাদ্য: লবন, ঝিনুক, ডাইক্যালসিয়াম ফসফেট, রকসল্ট ইত্যাদি।
চর্বি জাতীয় খাদ্য: পোল্ট্রি ওয়েল, সয়াবিন তৈল, ইত্যাদি।
ভিটামিন জাতীয় খাদ্য-
আকৃতির উপর ভিত্তি করে-
গুড়া খাদ্যঃ খাদ্যের সমস্ত উপকরণ চূর্ণের মিশ্রণকে গুড়া খাদ্য বা ম্যাস খাদ্য বলে। ম্যাস খাদ্য হাতের সাহায্যে বা যন্ত্রের সাহায্যে তৈরি করা যায়। হাতে প্রস্তত গুড়া খাদ্য সমভাবে মিশ্রণ হয় না তবে যন্ত্রের সাহায্যে প্রস্তত গুড়া খাদ্যের প্রতি দানা সমভাবে মিশ্রিত হয়।
টুকরা বা দানাজাতীয় খাদ্যঃ এটি গুটি বা বড়ি আকৃতির খাদ্যের চেয়ে আকারে ছোট হয়। সাধারণত: ব্রয়লার এবং লেয়ার বাচ্চার জন্য স্টার্টার রেশন হিসেবে ব্যবহার করা।
গুটি বা পিলেট খাদ্যঃ গুড়া খাদ্যকে চাপ প্রয়োগ করে ছাচের ভিতর ঢুকিয়ে গুটি বা বড়ি আকৃতির খাদ্য তৈরি করা হয়। ২ থেকে ৩ সপ্তাহ বয়সের সময় ব্রয়লার বাচ্চাদেরকে গুড়া বা দানা খাদ্যের পরিবর্তে পিলেট বা বড়ি আকৃতির খাদ্য দিতে হবে। ৪ সপ্তাহের সময় বাড়ন্ত বাচ্চাদেরকে সম্ভব হলে একটু বড় আকারের পিলেট বা গুটি খাদ্য দেয়া যেতে পারে।
মুরগির দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে আবহাওয়া ও তাপমাত্রার প্রভাব: আবহাওয়ার তাপমাত্রা মুরগির খাদ্য খাওয়ার পরিমাণের উপর প্রভাব বিস্তার করে। ৭০০ ফা. (২১.১০ সে.) তাপমাত্রায় বিভিন্ন বয়সের মুরগি স্বাভাবিক মাত্রায় খাদ্য খায়।
ক) তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে
খাদ্য খাওয়ার পরিমাণ কমে
রক্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কমে
বিপাকীয় কার্যক্রম কমে
পানি পিপাসা বাড়ে
ডিমের খোসা পাতলা হ
খ) তাপমাত্রা কমে গেলে
তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সাথে সাথে মুরগির দেহের তাপ অপসারণ প্রক্রিয়া বেড়ে যায় ফলে দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্য বিপাকীয় কার্যক্রম বেড়ে যায়।
আবহাওয়ার তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে খাদ্য গ্রহনে সমস্যা ও সমাধানের উপায়
তাপমাত্রা কমে গেলে মুরগি খাদ্য বেশি খায় এবং তাপমাত্রা বাড়লে খাদ্য কম খায়। ফলে খাদ্যের পুষ্টি উপাদান গ্রহণের পরিমাণও কম-বেশি হয়।
সমাধানের উপায়
১. মুরগির ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা;
২. খাদ্যে পুষ্টি উপাদানগুলোর পরিমাণ পুনর্বিন্যাস করা;
৩. খাদ্য গ্রহণের পরিমাণের সাথে পুষ্টি উপাদানের সমতা রক্ষা করা।