চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি দর্শন, বঙ্গবন্ধু নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। যাকে নিয়ে হাজারো পুস্তক রচনা করেও তাঁর কীর্তি শেষ হবে না। শৈশব-কৈশোরের বঙ্গবন্ধু ছিলেন ন্যায়ের মূর্ত প্রতীক। সেজন্য শিশুদের মনজগত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার মাধ্যমে গড়ে তুলতেই ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবসকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে আমাদের দেশ এখনও পুরোপুরি শিশুবান্ধব হয়ে ওঠেনি। তাদের চিত্তবিনোদনের সুযোগ এখনও সঙ্কুচিত রয়ে গেছে। আইন করে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করা হলেও এখনও আমাদের চারপাশে শিশুরা নির্যাতিত ও অবহেলিত। গণমাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশে তেমন কোনো অনুষ্ঠান নেই। এই জায়গাগুলোতে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। ফিলিস্তিনে নির্বিচারে শিশু ও নারীদের উপর যে অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে, আমরা তার প্রতিবাদ জানাই, ধিক্কার জানাই। সেইসাথে দেশের সকল কোমলমতি শিশুদের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে চুয়েট যাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে আমরা সেভাবে নিজেদের আত্মনিয়োগ করি।” তিনি আজ ১৭ই মার্চ (রবিবার) ২০২৪ খ্রি. সকাল ১০.২০ টায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত “বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সরাব ঘরে” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়েটের মাননীয় প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদ, সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ.এইচ. রাশেদুল হোসেন, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফেকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। এতে আরও বক্তব্য রাখেন স্টাফ ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বনিক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আরাফাত রহমান, কর্মকর্তা সমিতিরি সভাপতি প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম। অনুষ্ঠানমালা সঞ্চালনা করেন উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) জনাব মোহাম্মদ ফজলুর রহমান ও উপাচার্য কার্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) জনাব মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবার ও বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ ক্বারী মাওলানা মোহাম্মদ নুরুল্লাহ। এর আগে বঙ্গবন্ধুর শৈশব-কৈশোর ও জাতীয় শিশু দিবসের উপর একটি প্রমাণ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার প্রায় ৮০জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।
এর আগে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কার্যালয়ের সামনে থেকে এক আনন্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে স্বাধীনতা চত্ত্বর সংলগ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এ সময় মাননীয় প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। পরে চুয়েট বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। দিনব্যাপী অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- চুয়েটের ছাত্র-ছাত্রী ও ক্যাম্পাসের শিশু-কিশোরদের জন্য রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিশেষ দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ ইত্যাদি।