ক্যাপসিকাম। যার উৎপত্তিস্থল আমেরিকাতে। সেই বিদেশি ক্যাপসিকামের চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক রফিকুল ইসলাম। ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার শাহপুর গ্রামের ১৫ শতক জমিতে ক্যাপসিকামের চাষ করেছেন তিনি। তার গাছের ক্যাপসিকামগুলো দারুণ তরতাজা।
প্রতিটি গাছে ক্যাপসিকামও ধরেছে প্রচুর পরিমাণে। ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হলেও মুখে হাসি নেই কৃষক রফিকুলের। কারণ ক্যাপসিকামের স্থানীয় কোনো বাজার গড়ে উঠেনি। অনেকে এটা কীভাবে খেতে হয় সেটাও জানেন না। আর স্থানীয় বাজারেও ক্যাপসিকাম বিক্রি হচ্ছে না।
কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে লাউ, পেঁপে, কুমড়া, তরমুজ, ড্রাগন, আখসহ বিভিন্ন ফল ও ফসলের চাষ করে আসছেন। নতুন ফল ফসল চাষে তার অনেক আগ্রহে রয়েছে। সেই আগ্রহ থেকে তিনি এবার ১৫ শতক জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন।
তিনি আরও জানান, আগে জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করে মাটি ঠিক করতে হয়। এরপর মালিচিং বেড তৈরি করে চারা লাগাতে হয়। ক্যাপসিকামের চারা লাগানোর ৬০ থেকে ৭০ দিনের মাথায় ফলন পাওয়া যায়। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করলে গাছ ভালো থাকে এবং পানি দিলে তা দীর্ঘক্ষণ থাকে। প্রতিটি গাছে গড়ে দুই থেকে তিন কেজি করে ক্যাপসিকাম ধরে। চারা লাগানোর ৭০-৮০ দিনের মধ্যে ফল বিক্রি করা সম্ভব।
১৫ শতক জমিতে তার সেচ, সার কীটনাশক, পরিচর্যাসহ খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে তিনি জমিতে ৬০ টাকা কেজি দরে ৫০০ কেজি ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছেন। এছাড়া ক্ষেতে এখনও ২ হাজার কেজির বেশি ক্যাপসিকাম ধরে আছে।
রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদেশি ফসল চাষ করে যখন ফল দেখতে পেলাম তখন আনন্দে মনটা ভরে গিয়েছিল। কিন্তু সেই আনন্দ এখন নিরান্দে হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ ক্যাপসিকাম অভিযাত শ্রেণির মানুষ খেয়ে থাকেন। অভিযাত হোটেলে এটা চলে। কিন্তু ক্যাপসিকামের স্থানীয় কোনো বাজার নেই। লোকাল বাজারে নিয়ে গেলে অনেকেই এটা চেনে না। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় বাজারে ক্যাপসিকামের বিক্রিও নেই।
বিভিন্ন বাজারে যোগাযোগ করে তিনি মাত্র ৫০০ কেজি ক্যাপসিকাম ৬০ কেজি টাকা দরে বিক্রি করতে পেরেছেন। রোজার মাস চলে আসায় বর্তমানে তা আর বিক্রি হচ্ছে না। এজন্য তিনি বিভিন্ন সুপার সপ ও বিভিন্ন চাইনিজ হোটেলে যোগাযোগ করছেন। দুইটি চাইনিজ হোটেলে থেকে কিছু ক্যাপসিকামের অর্ডার পেয়েছেন। কিন্তু তারা রোজার পর ক্যাপসিকাম নিতে চেয়েছেন। রোজা শেষ হতে হতে ক্যাপসিকাম হয়ত ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাবে।