ঠাকুরগাঁওয়ে সোলারের সেচে আগ্রহ বাড়ছে

82

ঠাকুরগাঁও জেলার ইউনিয়নগুলোতে একটা সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জমিতে সেচ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো কৃষকদের। অনেক সময় সেচ দিতে না পেরে জমিতেই নষ্ট হয়ে যেত ফসল। ধারদেনা করে ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে কৃষকদের আত্মহত্যা ছিল নিয়মিত ঘটনা। সময়ের বিবর্তনে আধুনিক হয়েছে সবকিছু। আধুনিক হয়েছে দেশের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাও। পাশাপাশি ব্যবহার বেড়েছে সোলার প্যানেলের। বাড়তি খরচ বা ঝামেলা না থাকায় সোলারের দিকে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। বিদ্যুৎ নিয়ে বাড়তি চিন্তা মাথা থেকে পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলে দিয়েছেন কৃষকরা। হঠাৎ লোডশেডিংয়ে পানির পাম্প নষ্ট হওয়ারও চিন্তা নেই এখন তাদের। ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গী মহাসড়কের আশপাশের আরাজি ঝারগাঁও নামে এলাকায় অনেক জমিতে সোলার প্যানেল ব্যবহারের মাধ্যমে সেচ দিয়ে বোরো আবাদ করতে দেখা গেছে কৃষকদের।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫৮ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে বোরো চারা লাগানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোলানি গ্রামের মো. আমিরুল ইসলাম নামের এক কৃষক জানান, সোলারের মাধ্যমে পানি দিলে সমস্যা হয় না। বাড়তি লোকের প্রয়োজন নেই। কিন্তু আগে যখন শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিতাম তখন বাড়তি লোক লাগত। খরচও হতো বেশি। সেই সঙ্গে শ্যালো দিয়ে পানি দিতে প্রচুর শ্রম দিতে হতো। তিনি আরও বলেন, এখন আমি সোলারের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিচ্ছি। এখানে কষ্ট অনেক কম। বর্তমানে ১ বিঘা জমিতে সোলার প্যানেল দিয়ে সেচ দিতে খরচ হচ্ছে ২ হাজার টাকা। অপরদিকে শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিতে খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা।

রহিমা বেগম, আজিজুল, সলেমান আলীসহ আরও কয়েকজন কৃষক জানান, সোলারের কারণে বর্তমানে অল্প খরচে বোরো ধান রোপণ করা যাচ্ছে। আগে সিরিয়াল দিয়ে পানি নিতে হতো। এখন ইচ্ছামতো পানি নেয়া যাচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, বোরো মৌসুমে সোলার প্যানেলের সাহায্যে জমিতে সেচ কাজ করছেন কৃষকেরা। সোলার প্যানেল ব্যবহারে কৃষকের খরচ এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। এ জন্য কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমে এসেছে।