ঐতিহ্যবাহী ফোরকার পাড় পুকুরে মাছ ধরার উৎসবে মেতেছেন শতাধিক জেলে

118

একটি পুকুরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে মাছ ধরা উৎসব। ঐতিহ্যকে ধরে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারও মাছ ধরার উৎসবে মেতেছেন শতাধিক জেলে। উৎসব করে মাছ ধরার এমন দৃশ্যের আনন্দ উপভোগ করতে পুকুরের চারপাশে ভিড় করেছেন হাজারো দর্শনার্থী ও ক্রেতা। প্রায় ২০০ বছরের অধিক সময় ধরে শরীয়তপুরের ফোরকার পাড় নামক স্থানে এমন মাছ ধরার আয়োজন যেন আরও একবার মনে করিয়ে দেয় আমরা ‘মাছে ভাতে বাঙালি’।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের শুতলকাঠি গ্রামের ফোরকার পাড়ের ঐতিহ্যবাহী পুকুরটিতে মাছ ধরা শুরু করেন জেলেরা। উৎসব করে মাছ ধরার এ আয়োজন চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ ও মাছ ধরার আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, শুতলকাঠি গ্রামের ফোরকার পাড়ে ঐতিহ্যবাহী পুরোনো একটি বিশাল পুকুর (দিঘি) রয়েছে। শুরু থেকেই পুকুরটির মাছ ধরা উৎসবের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কারা প্রথমে এমন আয়োজন করে মাছ ধরার শুরুটা করেছিলেন, তা কেউই সঠিক ভাবে বলতে না পারলেও স্থানীয় বয়োজেষ্ঠ্যদের ভাষ্যমতে কমপক্ষে ২০০ বছরের অধিক সময় ধরে এভাবেই পুকুরটির মাছ ধরা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও শনিবার দিনটিকে মাছ ধরার জন্য নির্ধারণ করে পুকুরের ৩২ জন মালিক ও মাছ ধরা আয়োজক কমিটি। মাছ ধরার সময় নির্ধারণ হওয়ার পরে গত কয়েকদিন ধরে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১১১ জন জেলে আয়োজক কমিটির নিয়ম মেনে মাছ ধরার জন্য দুই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা মূল্যের টিকেট ক্রয় করেন। এরপর শনিবার সকাল থেকে একযোগে ঝাঁকি জালের মাধ্যমে মাছ ধরা শুরু করেন তারা। জেলেদের মাছ ধরা দেখতে পুকুরের চারপাশে ভিড় করেন বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ৩ হাজার দর্শনার্থী ও ক্রেতা। জেলেদের জালে বড় কোনো মাছ ধরা পড়লেই পুকুরের চারপাশ থেকে এসব দর্শনার্থী ও ক্রেতারা জয়ধ্বনি করে আনন্দ প্রকাশ করেন। মাছ ধরে বিক্রির এমন উৎসবকে কেন্দ্র করে পুকুরের এক প্রান্তে বসেছে অস্থায়ী মেলা। প্রতি বছর দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে পুকুর পাড়ে জড়ো হওয়ার পর একযোগে ছন্দের তালে তালে পানিতে নেমে মাছ ধরা যেন বাঙালির ঐতিহ্যের জয়গান।