নিষেধাজ্ঞার দুই মাস শেষ হয়েছে। তাই আবারও সাগর-নদীতে নেমেছেন জেলেরা। তবে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। হতাশা নিয়ে প্রতিদিনই তীরে ফিরে আসছেন জেলেরা।
তারা বলছেন, নদীতে গিয়ে যে পরিমাণ মাছ পাচ্ছেন তা বিক্রি করে তারা যৎসামান্য টাকা পাচ্ছেন। এ দিয়ে সংসার চলছে না। এখন ধার-দেনা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
ভোলা সদর উপজেলার তুলাতুলি মেঘনা নদীর তীরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার (১ মে) থেকে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে দলবেঁধে নেমেছেন জেলেরা। প্রতিদিনই বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জাল, নৌকা ও ট্রলার নিয়ে নদী চষে বেড়াচ্ছেন। তবে জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।
ইকরাম নামের একজন জেলে বলেন, ‘দুই মাসের অভিযানের (নিষেধাজ্ঞা) সময় কামাই-রোজগার ছিল না। ধার-দেনা করে সংসার চালাইছি। এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে পারিনি। অভিযান শেষে মনে করছি নদীতে যাইয়া অনেক বেশি ইলিশ পামু। সেই ইলিশ ঘাটে বিক্রি কইরা আগের ধার-দেনা ও বকেয়া করমু। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চালামু। যথেষ্ট পরিমাণ ইলিশ না পাওয়ায় কিছুই হচ্ছে না।’
জামাল মাঝির নেতৃত্বে পাঁচজন জেলে বৃহস্পতিবার (২ মে) ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মেঘনা নদীতে ট্রলার নিয়ে জাল ফেলে বিভিন্ন সাইজের ৮টি ইলিশ পেয়েছেন। তা তুলাতুলি ঘাটে বিক্রি করে পেয়েছেন তিন হাজার ৬০০ টাকা।
জামাল মাঝি জানান, এ টাকা থেকে ট্রলারের তেলের দোকানের এক হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ট্রলার মালিককে দেওয়া হয়েছে ৬৫০ টাকা। বাকি এক হাজার ৭৫০ টাকা পাঁচজন মাঝি প্রত্যেকে ৩৫০ টাকা করে ভাগ করে নিয়েছেন।
কথা হয় তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার কামাল হোসেন ও আল-আমিনের সঙ্গে। তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় ঢাকা ও চাঁদপুর পাইকারি মোকাম থেকে দাদনে (সুদ) টাকা এনে জেলেদের দাদন দিয়ে বিপাকে পড়েছেন। নদীতে জেলেরা খুবই কম ইলিশ পাচ্ছেন। যে কারণে পাইকারি মোকামে ঠিকমতো ইলিশ পাঠাতে না পারায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।