সাতক্ষীরার আম যাচ্ছে ইউরোপের বাজারে

60

 

সাতক্ষীরার আমের সুনাম রয়েছে ইউরোপে। এবারও ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হচ্ছে সাতক্ষীরার আম। গত ৯ বছর ধরে সাতক্ষীরা থেকে এই আম রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে ইতালিতে এই আমের কদর অনেক বেশি। ‘সাতক্ষীরা ব্র্যান্ড’ এই নামে পরিচিত সাতক্ষীরার রপ্তানিযোগ্য আম এবারও যাচ্ছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন ও যুক্তরাজ্যে। বাগান থেকে আম সংগ্রহ ও প্যাকেটজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।

জানা গেছে, বরাবরের মতো এবারও সবার আগে বাজারে উঠেছে সাতক্ষীরার আম। আর এ কারণে আমের দেশের মানুষেরা এসেছেন সাতক্ষীরায় আমের ব্যবসা করতে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ীরা এখন সাতক্ষীরায়। সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। সাতক্ষীরায় শেষ হলে রাজশাহীতে আম ভাঙার সময় শুরু হয়।

বিদেশে রপ্তানির পাশাপাশি সাতক্ষীরার এই আম মিলবে বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুরসহ অন্যান্য জেলার বিভিন্ন আড়তে। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত আমের মধ্যে হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোবিন্দভোগ, আম্রপালি, মল্লিকা, সিঁদুররাঙা, ফজলি, কাঁচামিঠা, বোম্বাই উল্লেখযোগ্য। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত আম গুণেমানে ও স্বাদে অনন্য। এছাড়া মাটি, আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে এখানকার বাগানের আম অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেক আগে পাকে।

সাতক্ষীরার আমের কদর এখন অনেক বেশি। মধুমাসে অতিথি ও জামাই আপ্যায়নে আমের বিকল্প নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত জেলার মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন চাকরিজীবীরা সাতক্ষীরার আমের জন্য অপেক্ষায় থাকেন।

চলতি মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে হিমসাগর ও ২৫ তারিখ থেকে ল্যাংড়া আম ভাঙা শুরু হয়েছে। গত ৯ বছর ধরে চলমান রপ্তানির প্রক্রিয়ায় এবারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০ মেট্রিক টন। এই আম যাবে ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও স্পেনে। একই সঙ্গে পাওয়া যাবে রাজধানীর বিভিন্ন চেইন শপে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ, সলিডারিডাড ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ও কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২০১৫ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম রপ্তানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমেও আম রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া আম উৎপাদনের জন্য বেশ উপযোগী। এ জেলার আম অন্যান্য জেলার চেয়ে ১৫-২০ দিন আগে পাকে। খেতেও বেশ সুস্বাদু। তাই রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জকে পেছনে ফেলে রপ্তানির বাজারে বিশেষ গুরুত্ব পায় সাতক্ষীরার ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালি আম। তবে গত কয়েক বছর ধরে গোবিন্দভোগ আমও রপ্তানির তালিকায় যোগ হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য চার হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২৯৯টি বাগান পরিচর্যার আওতায় রাখা হয়। এর মধ্যে শতাধিক বাগান বেছে নিয়ে বিদেশে আম রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এসব বাগান থেকে প্রায় ৩৫০ মেট্রিক টন আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গুণমান সম্পন্ন আম উৎপাদন করতে কৃষি মন্ত্রণালয় অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়। এর ২৬টি নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালা মেনে উৎপাদন করা আম বিদেশে রপ্তানি করা হবে।