হাঁসের কলেরা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক একটি রোগ। খুব অল্প সময়ে খামার উজাড় হয়ে যায়। বয়স্ক হাঁসের চাইতে বাচ্চা হাঁস বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।সবচেয়ে বড় বিষয় যেকোন বয়েসের হাঁস কলেরায় আক্রান্ত হতে পারে। তাই জেনে রাখা উচিৎ হাঁসের কলেরা রোগের ১০ লক্ষণ ও প্রতিকার। তাহলে সহজেই ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
আক্রান্ত হাঁস, দুষিত খাদ্য ও খামারের ও বাড়িতে ব্যবহৃত জিনিসপত্রের মাধ্যমে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে সবজায়গায়। খামারের স্যাঁতস্যাঁতে লিটার ও ভেজা আবহাওয়া এ রোগ ছড়াতে সাহায্য করে।
হাঁসের কলেরা রোগের কয়েকটি লক্ষণ দেখা যায়: ডাক কলেরা রোগটি অনেকটা হাঁসের প্লেগ রোগের সাথে মিল আছে।
১. হঠাৎ করেই সুস্থ হাঁস অনেক গুলো এক সাথে মারা যেতে পারে
২. আক্রান্ত হাঁস বারবার পাতলা মল ত্যাগ করতে পারে ফিকে সবুজ বা হলুদ রংয়ের।
৩. আক্রান্ত হাঁসের ক্ষুধা মন্দা হয় কিন্তু প্রচুর পানি পান করে।
৪. কলেরা রোগে আক্রান্ত হাঁসের চোখ মুখ ফুলে থাকে।
৫. কলেরা আক্রান্ত হাঁসের গায়ে জ্বর থাকে।
৬. কলেরা আক্রান্ত হবার পর ঝিমায় এবং চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
৭. আক্রান্ত হাঁসের কাণের লতি নীল বা কালচে বর্ণ ধারণ করে।
৮. আক্রান্ত হাঁসের চোখ দিয়ে পানি পড়ে ও নাক, মুখ, দিয়ে লালা ঝরে।
৯. হাঁসের ডিম দেওয়া কমে আসে।
১০. এ রোগটির একেবারে শেষ দিকে হাঁসের দুপায়ের সন্ধি বা গাট বেশ ফুলে থাকে।
ডাক প্লেগ রোগ হলে পাতলা মলের সাথে সামান্য রক্ত দেখা যায় আর কলেরা হলে মলের সাথে রক্ত মোটেই থাকেনা।
হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা: হাঁসের খামার সব সময় পরিস্কার-পরিছন্ন রাখতে হবে। কোন সময় যদি খামারে এ রোগ দেখা দেয় রোগাক্রান্ত হাঁস আলাদা স্থানে রাখতে হবে। যে পাত্রে হাঁসের খাবার দেওয়া হয় খাওয়া হয়ে গেলে সাথে সাথে পরিস্কার করতে হবে। কলেরা রোগ নাহয় সে জন্য আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া খামারের সকল হাঁসকে কলেরা রোগের টিকা দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম।
কলেরা রোগের টিকা ব্যবহার পদ্ধতি: কলেরার অষুধ উপজেলা অথবা জেলা প্রাণীসম্পদ অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। কলেরা রোগের টিকা ১০০ সিসি বেতলে পাওয়া যায়। প্রতিটি হাঁসকে ১ সিসি করে ইনজেকশন চামড়ার নিচে বুকে/ রানে এ টিকা দিতে হয়। হাঁসের বাচ্চার বয়স যখন ১৫-২০ দিন হবে তখন এই টিকা দিতে হবে এবং দ্বিতীয় ডোজ ৪০থেকে ৪৫ দিন বয়সে। তাহলে ৪-৫ মাস আর কোন ভয় থাকবে না। টিকার কার্যকাল ৬ মাস থাকে । কিন্তু ৪-৫ মাস পরপর দিলে কলেরা রোগ হওয়ার আশংকা থাকে না।