কবুতর পালনে ভিটামিনের চাহিদা পূরণে করণীয় বিষয়সমূহ

61

কবুতর পালনে ভিটামিনের চাহিদা পূরণে করণীয় যেসব কাজ রয়েছে সেগুলো কবুতর পালনকারীদের জেনে রাখতে হবে। আমাদের দেশের অনেকেই শখের বসে আবার কেউ কেউ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতর পালন করে থাকেন। কবুতর পালনে ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আজ জানবো কবুতর পালনে ভিটামিনের চাহিদা পূরণে করণীয় সম্পর্কে-

কবুতর পালনে ভিটামিনের চাহিদা পূরণে করণীয়ঃ
ভিটামিন-এ এর ঘাটতিঃ

দেহে ক্ষত হয়, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায় এবং অক্ষিঝিল্লির প্রদাহ দেখা দেয়। ক্ষুধা কমে যায়, দৈহিক বৃদ্ধি ও পালকের গঠণ ব্যাহত হয়। উৎপাদ ও ডিম তা দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। নিয়মিত ভিটামিন, প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান অথবা ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদান করতে হবে।

ভিটামিন ডি এর ঘাটতিঃ

অস্থি নরম ও বাঁকা হয়ে যায়, ডিম উৎপাদন ও তা দেওয়ার ক্ষমতা কমে।

ভিটামিন ডি ও মিনারেল প্রিমিক্স প্রদান, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার (কডলিভার অয়েল, ফিস মিল) প্রদান করতে হবে।

ভিটামিন ই :

এনসেফালোম্যালাশিয়া রোগ হয়, পক্ষাঘাতের ফলে চলতে অসঙ্গতি দেখা দেয়। বুক ও পেটের নিচে তরল পদার্থ জমে, ইডিমা হয়। ডিমের উর্বরতা কমে যায়।

সেলিনিয়ামসহ ভিটামিন ই প্রদান করতে হবে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার (শস্য দানা, গম, চাউলে কুড়া, শুটকি মাছ) খাওয়াতে হবে।

ভিটামিন কে:

রক্তক্ষরণের কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

ভিটামিন কে প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান। ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদান (সবুজ শাকসবজি ও মাছের গুঁড়া)।

ভিটামিন বি ১:

পা, ডানা ও ঘাড়ে পক্ষাঘাত হয়। ঘাড়ের পক্ষাঘাতের ফলে ঘাড় পেছন দিকে করে আকাশের দিকে মুখ করে থাকে, চলনে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। ভিটামিন বি ১ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান (চাউলের কুড়া, গমের গুঁড়া, শাক সবজি)

ভিটামিন বি ২:

ছানার পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়। পরে নখ বা আঙ্গুল বাঁকা হয়ে যায়। ছানার দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

ভিটামিন বি ২ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল (সবুজ শাক সবজি, ছোলা, খৈল, আলফা-আলফা, ঈষ্ট)

ভিটামিন বি ৬:

ক্ষুধামন্দ্যা দেখা দেয়। ছানার বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। প্যারালাইসিস ও পেরোসিস হতে পারে। ভিটামিন বি ৬ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল (শস্য, মাছের গুঁড়া, আলফা-আলফা, ঈষ্ট ইত্যাদি)

ভিটামিন বি ১২:

বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও রক্তশূন্যতা দেখা দেয় ডিমের উর্বরতা হ্রাস পায়। ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান। ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদান (যকৃত, মাংস ফিসমিল ইত্যাদি)

ফলিক এসিড:

রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও পালক কম গজায়। ০.০১৪ মিগ্রা প্রতিদিনের প্রয়োজন। ফলিক এসিড সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও সাথে ম্যানগানিজ (সহ) প্রদান করতে হবে। ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদান (যকৃত, ঈষ্ট)।

ম্যানটোথেনিক এসিড:

বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও চর্ম রোগ হয়। পা ও চোখের চারিপাশে নেক্রোসিস হয়। ডিমের উর্বরতা হ্রাস। ০.৩৬ মিগ্রা প্রতিদিনের প্রয়োজন। প্যানটোথেনিক এসিড সমৃদ্ধ ভিটামিন প্রদান (চীনাবাদাম, আখের গুড়, ঈষ্ট, চাউলের কুড়া, গমের ভূষি ইত্যাদি)