ঠাকুরগাঁওয়ে বুড়ি বাঁধে মাছ ধরার ধুম

47

হাতে জাল নিয়ে সারি বদ্ধ হয়ে পানিতে নেমেছেন কয়েক হাজার মানুষ। কেউ ভেলায়, কেউ ছোট নৌকায় করে চলছে মাছ ধরার এক প্রতিযোগিতা। এ যেন মাছ ধরার ধুম চলছে৷ এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যটি ঠাকুরগাঁও বুড়ির বাঁধ এলাকার।

গতকাল ১৪ অক্টোবর সোমবার বিকেলে ছেড়ে দেওয়া হয় বাঁধের পানি। তখন থেকে শুরু হয়ে জেলেদের আগমন। উৎসবটি চলবে মঙ্গলবার দিনব্যাপী। এই উৎসবে যোগ দিয়ে অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও

কারো হাতে পলো,কারো হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাঁদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন। অনেকে আবার ভিড় জমিয়েছে মাছ ধরা দেখতে। এই মাছ উৎসব ঘিরে বাঁধ এলাকায় বসানো হয় বিভিন্ন খাবারের দোকানো।

হাতে জাল নিয়ে সারি বদ্ধ হয়ে পানিতে নেমেছে হাজারো মানুষ।

জানা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৯৫১-৫২ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট (সুইসগেইট) নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর এ পোনাগুলোর দেখভাল করে আকচা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)।

৫০ একর এলাকাজুড়ে সুক নদীর ওপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ মৎস্য অভয়াশ্রম। সারা বছর কাউকে এখানে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না। শুধু জমানো পানি ছেড়ে দেওয়ার পর এ সময়ই মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া।

সদর উপজেলার ভেলারহাট এলাকা থেকে মাছ ধরতে আসা মেহেদী ইসলাম বলেন, ভোর রাতে মাছ ধরার জন্য এসেছি৷ গতবার এতক্ষণে ভালো মাছ পেয়েছিলাম। এবারে কারেন্ট জালের ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে মাছ মিলছে না৷ প্রতিবারে বলা হয়ে থাকে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা যাবে না৷ অথচ প্রশাসন কোনো ভাবে আটকাতে পারছেন না

উৎসব দেখতে আসা স্কুল শিক্ষক দুলাল ইসলাম বলেন, মাছ কেনার জন্য এসেছি। তবে এবারে মাছের দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। এবারে নানা প্রজাতির মাছ ও পাওয়া যাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম যাকারিয়া বলেন, বুড়ি বাঁধটি খুলে দেয়ার পর মাছ ধরার ধুম পড়েছে। নানা প্রজাপতির মাছ ধরছেন এ উৎসবে৷ কৃষিতে সেচ দিতে সুবিধা হবার জন্য এ জলকপাট নির্মাণ করা হয়েছে৷ প্রতিবারে গেট খোলা হলে মাছ ধরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ৷