আমদানির পরও কমছে না কাঁচা মরিচের দাম

51

আমদানি স্বাভাবিক থাকার পরেও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ স্থানীয় সব খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫০-২০০ টাকা। কারণ হিসেবে দুর্গাপূজার জন্য টানা পাঁচ দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। তবে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এমন দাম বৃদ্ধিতে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমদানি বাড়লেও আড়তে তেমন কমেনি কাঁচা মরিচের দাম। টানা পাঁচ দিন বন্দর বন্ধ থাকবে জেনে কাঁচামাল গুদামজাত করে দামবৃদ্ধি করেছেন আড়তদাররা।

গতকাল বুধবার সকালে বেনাপোল ও শার্শার একাধিক বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও এই সব বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি। আজ তা বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪০০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে, গত দুই দিনে এ বন্দরে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁচা মরিচের আমদানি। সোমবার একদিনে ৫০ ট্রাকে ৫৮১ টন ৯৭০ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২ ট্রাকে ১৪৪ টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। কেনা থেকে শুরু করে শুল্ককর মিলিয়ে আমদানি করা এই মরিচের কেজিপ্রতি খরচ পড়েছে ৯৬-১০০ টাকা। অথচ যশোরের শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি। তবে বন্দর বন্ধ হওয়ায় মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ বিক্রেতারা।
বেনাপোল চেকপোস্ট বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা ফজলুর রহমান বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেও মরিচ কিনেছিলাম ৯০ টাকা কেজি। আজ দেখছি ৩৫০ টাকা কেজি। এভাবে চললে আমরা চলবো কী করে?’

কাঁচা মরিচ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকার বাসিন্দা। শুনছি এবং দেখছি, এই বন্দরে প্রচুর কাঁচামরিচ আমদানি হচ্ছে। সেই হিসেবে তো ১০০ টাকার নিচে দাম হওয়া দরকার। অথচ এখনও আমাদের ৩৫০-৪০০ টাকা কেজির ওপরে কাঁচামরিচ কিনে খেতে হচ্ছে।’

বেনাপোল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী রাশেদ আলী বলেন, ‘বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। সব সবজি এবং পেঁয়াজের দামও আকাশ ছোঁয়া। তবে পূজার কারনে পোর্ট বন্ধ থাকায় বাজারে বড় বড় ব্যবসায়ীরা বস্তা বস্তা কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজ মজুত করেছিল, দাম বেশি পাওয়ার আশায়।’ আমদানি স্বাভাবিক হলে আবার দাম কমে যাবে।
বেনাপোল বন্দরের পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, ‘পেঁয়াজে তেমন পড়তা না থাকায় এখন কাঁচা মরিচ আমদানি করছি। বর্তমান কাঁচা মরিচ আমদানি অনেক বেশি হচ্ছে। বাজারে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টা শিগগিরই কেটে যাবে। গত দুই দিনে ৬২ গাড়ি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে এই বন্দর দিয়ে।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াসিন জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রশিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কিনাু সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মরিচের দামে কোনও কারসাজি হচ্ছে কিনা তাও যাচাই করা হবে।