গর্ভবতী গাভীকে নিরাপদে রাখতে খামারিদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে

34

পালন করা গাভী গর্ভবতী হলে গাভীকে নিরাপদ রাখার জন্য বেশ কিছু কাজ করতে হয়। নিচে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-

১। স্বাস্থ্যকর পরিবেশঃ যে ঘরে আপনি গর্ভবতী গাভীকে রাখবেন সেটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া চাই। যাতে কোন ধরনের জীবাণুর সংক্রমণ না হয়। আর ঘরে অবশ্যই পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে, যাতে গরু নড়া চড়া ও ওঠা-বসা করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। কারন এসময় একটি ধাক্কা খেলেও গর্ভাপাত হয়ে যেতে পারে।গর্ভবতী গাভীর ঘর প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে।প্রয়োজনে হালকা জীবানু নাশক মিশিয়ে পানি দিয়ে ঘুয়ে দিতে হবে।এতে করে ঘরে রোগ জীবাণুর পরিমান অনেক কমে যাবে।

২। আলাদা বাসস্থানঃ গর্ভকালের ৭ মাস পর্যন্ত গাভীর দেখা শোনা, খাদ্য, পরিচর্যা, দুধ দোহন সবই স্বাভাবিক ভাবে চলতে থাকবে। কিন্তু ৭ মাসে পরার সাথে সাথে গাভিটি বিশেষ যত্ন প্রত্যাশা করে।কারন এই সময়ই থেকে গর্ভস্থ বাচ্চাটির বৃদ্ধি খুব দ্রূত হয়। এ বাড়তি পরিচর্যার প্রথম কাজ হিসেবে গাভীটিকে অন্যান্য গাভী থেকে আলাদা করতে হবে। এই সময় গাভির পূর্ন বিশ্রাম প্রয়োজন। আর দিতে হবে বাড়তি খাবার, বাড়তি পরিচর্যা থাকার ঘরটি গাভীর উপযোগী হওয়া দরকার।

৩। বাচ্চা প্রসবের সঠিক সময় জানাঃ গর্ভবতী গাভীর সুরক্ষার জন্য প্রথমেই জানতে হবে প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন করানোর বিষয়টি। একটি গাভীকে বীজ দেওয়ার পর ২৭০-২৯০ দিনের মধ্যে সাধারণত বাচ্চা দেয়। তাই বীজ দেওয়ার পরই আপনার জেনে নিতে হবে সম্ভাব্য কত দিন পরে প্রসব হবে। সেই হিসেবে আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

৪। গাভীকে শান্ত রাখতে হবেঃ গর্ভাবস্থায় গাভীর জন্য শান্ত ঝামেলা মুক্ত পরিবেশ খুব প্রয়োজন।এই অবস্থায় গাভীকে কোন ভাবেই ভয় পাওয়ানো, দ্রুত তাড়ানো বা উত্তেজিত করা যাবে না।অস্থির হয়ে লম্প-ঝম্প করতে গিয়ে কম্প হয়ে গর্ভের বাচ্চাটির মহা সর্বনাশ হতে পারে।

৫। সুষম খাদ্য প্রদানঃ দুধ উৎপাদঙ্কারী গর্ভবতী গাভীর দুধ উৎপাদনের শেষ ভাগে৭১ দেহের সঞ্চিত ভিটামিন, মিনারেল,চর্বি ও অন্যান পুষ্টিকর উপাদান সমূহ দুধের মাধ্যমে প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায়। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে গর্ভস্থ বাচ্চাটি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই এই সময়ই গাভীর স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ও গর্ভস্থ বাচ্চার স্বাভাবিক বাড়ন অক্ষুন্ন রাখার জন্য ২-৩ মাস অতিরিক্ত সুষম খাদ্য ও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।