আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি। শুধু তাই নয়, আমাদের দেশের সিংহভাগ মানুষ মাছ দিয়ে আমিষের চাহিদা পূরণ করে থাকে। দেশি মাছের স্বাদ বেশি হওয়ায় এই মাছ সবাই পছন্দ করে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে দেশি মাছ কমে যাওয়ায় এখন এ মাছের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে।
দেশি মাছ কমে যাওয়ায় এর সংরক্ষণও জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদী-নালা, খাল-বিল ও হাওরে যে পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয় তার ৩০ ভাগ মাছ ক্রেতার হাতে পৌঁছানোর আগেই পচে নষ্ট হয়ে যায় পরিবহন ও সংরক্ষণের অভাবে। এ কারণে প্রতি বছর কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। মাছ যাতে নষ্ট না হয় সেক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি আমরা।
মাছ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যায় সস্তা অথচ কার্যকরী বরফ বাক্স। এতে মাছ পরিবহন কৌশলটিতে বহুল ব্যবহৃত বাঁশের ঝুড়ির উন্নয়ন ঘটিয়ে তাপ চলাচল প্রতিরোধী বরফ বাক্সে পরিণত করা হয়েছে। পরিবর্তিত ঝুড়িতে মাছ ঝুড়ির সংর্স্পশে আসে না।
তাই বাঁশের চটির ফাঁক-ফোকর থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে না। এমনকি পলিথিন দিয়ে আগাগোড়া মোড়া থাকে বলে বার বার পরিষ্কার করে একই ঝুড়ি ব্যবহারেও সমস্যা হয় না। ২৫ থেকে ৩০ কেজি মাছ ধরে এমন একটি বাঁশের ঝুড়ির ভেতরের দিকটা হোগলা পাটি দিয়ে মুড়ে দিতে হবে।
হোগলার উপর দুই স্তর প্লাস্টিকের শিট দিয়ে সেলাই করে দিতে হবে। শিটের কিছু অংশ বাড়তি থাকবে। সেলাই করা প্লাস্টিকের শিটের উপর আর একটি পাতলা স্বচ্ছ পলিথিন শিট বিছিয়ে বরফ দেয়া মাছ পরিবহন করতে হবে। প্রথমে পলিথিন শিটের উপর প্রথম স্তরে বরফ রেখে মাছ সাজিয়ে দিতে হয়।
এরপর ভাঁজে ভাঁজে বরফ ও মাছের স্তর সাজিয়ে ওপরে জাম বরফ দিয়ে বাড়তি চট, হোগলা ও পলিথিন শিট একসাথে মুড়ে ঝুড়ির ওপরে বেঁধে নিতে হয়। ঝুড়ির মুখ সব সময় বেঁধে রেখে মাছ পরিবহন করতে হয়। এভাবে বরফ দেয়া মাছ ২৪ ঘণ্টা গুণাগুণ ঠিক রেখে সংরক্ষণ করা যায়।
২৪ঘণ্টা পর পর মাছের উপর সামান্য জাম বরফ দিয়ে প্রায় ৫-৬ দিন পর্যন্ত মাছ সংরক্ষণ করা যায়। হোগলাপাতা, ছেড়াজাল বা নাইলন কাপড় চমৎকার তাপ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।