পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লায় হাজার একর বোরো আমনের জমি প্লাবিত

345

20170811_040508
তৈয়বুর রহমান সোহেল, কুমিল্লা থেকে: শ্রাবণের ভারী বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকায় হাজার একর বোরো আমনের সদ্য রোপণকৃত জমি তলিয়ে গেছে। এতে করে বেশ দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষকরা।

গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত একটানা ভারী বর্ষণের পর আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

গতকাল সরেজমিনে জেলার সদর উপজেলা, বুড়িচং, সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রাম এলাকা ঘুরে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত একটানা আষাঢ়ের ভারী বর্ষণ হয়। বৃষ্টিপাত কমে এলে তার কিছুক্ষণ পর ভারতীয় উঁচুনিচু টিলাগুলো থেকে প্রবল বেগে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢলের পানি প্রবেশ করে। পানির তোড়ে ছোট বড় সড়কগুলো ডুবে যায়। আবার কোথাও কোথাও সড়ক ভেঙে পানিতে তলিয়ে যায় বোরো আমনের ক্ষেত।

জেলার সদর উপজেলার লোহাইমুড়ি, জঙ্গলবাড়ি, শালুকমুড়া, শিঙ্গারিয়া বিলে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের ৬/৮ মিটার পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পায়।

কৃষক আজিজ, ফকরুল, নাসির, জামাল মিয়া জানান, গত ১০/১৫ বছরেও এভাবে পাহাড়ি ঢলে আমাদের ধানী জমি প্লাবিত হয়নি। শ্রাবণের শেষ সময়ে এসে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ওই এলাকার সহস্রাধিক কৃষক দিশাহারা হয়ে গেছে।

কৃষক জমির মিয়া জানান, জঙ্গলবাড়ি এলাকার বেশিরভাগ প্রান্তিক কৃষক। ঋণ নিয়ে তারা প্রতি বছর ধান চাষ করেন। পাহাড়ি এলাকা হলেও এখানে পানি বেশিদিন স্থায়ী হয় না। তবে এ বছর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সদ্য রোপণকৃত জমির ধানের চারাগুলো উপড়ে চলে যায়। এখন নতুন করে বীজ ধান সংগ্রহ ও বীজতলা তৈরি করা না গেলে অধিক দাম দিয়ে কিনতে হবে।

এছাড়া আরো সমস্যা হলো বছরের এ সময়ের ধানের চারা জমিতে সঠিক সময়ে রোপণ করতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত ধান পাওয়া যায় না।

বুড়িচং উপজেলার শঙ্কুচাইল, আনন্দপুর এলাকার অন্তত বিশজন কৃষক জানান, হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলে তাদের জমি তলিয়ে যায়। এমতাবস্থায় নতুন করে বীজ ধান সংগ্রহ, বীজতলা তৈরি নিয়ে যে ব্যয় হবে তা বহন করার মতো সামর্থ খুব বেশিজন কৃষকের নেই। এতে করে ওই এলাকার কৃষকদের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ প্রসারিত হচ্ছে।

সরকারি সহযোগিতা না পেলে কৃষকদের চরম সমস্যার মুখে পরতে হবে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে, যেসব এলাকায় ধানী জমি প্লাবিত হয়েছে ওইসব এলাকার বেশিরভাগই প্রান্তিক কৃষক। তাই এসব কৃষকদের রক্ষা করতে হলে সরকারি সহযোগিতাই একমাত্র উপায়।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. শাহিনুল ইসলাম বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে রয়েছি। তবে আমি কৃষকদের দুঃশ্চিন্তা না করতেই আহ্বান করবো। কারণ কৃষকদের জন্যই আমরা। তবে আমি কৃষক ভাইদের উদ্দেশ্যে বলবো, ঢলের পানি বেশি সময় স্থায়ী হয় না। ঢলের পানি নেমে যাওয়ার পরে সরেজমিনে মাঠ পর্যায়ে ঘুরে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জানাবো।

‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু এখনো সর্বোতভাবে প্রাসঙ্গিক’

কুষ্টিয়া বাইপাসে তাল ও খেজুর গাছের চারা রোপন

মা-মেয়ের অভাবনীয় সাফল্য

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম