আল মামুন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে: জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন ওষুধ এবং খড় ভূষিসহ দেশীয় খাবার দিয়েই গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি হাতে নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গরু খামারিরা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণের মাধ্যমে এবার বাড়তি লাভের আশা করছেন তারা। তবে ভারতীয় গরু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাটগুলোতে প্রবেশ করলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে এখানকার ব্যবসায়ীরা।
পাশাপাশি ভারত থেকে গরু আসলে এখানকার ব্যবসায়ীদের ব্যাংকঋণের টাকাসহ পুঁজি হারানোর আশঙ্কা করছেন। তাই ভারতীয় গরু যাতে ঈদে দেশের বিভিন্ন হাটে প্রবেশ করতে না পারে সরকারের কাছে সেই দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জসহ বিভিন্ন খামারে ঘুরে জানা যায়, জেলার বিভন্ন উপজেলায় দেশি জাতের ছোট বড় গরু-মহিষের খামার রয়েছে দুই হাজারেরও বেশি। এসব খামারে গরু, মহিষ ও ছাগল পালন করা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন হাট থেকে কয়েক মাস আগে বিভিন্ন জাতের বিপুল পরিমাণ ছোট দেশীয় জাতের গরু, মহিষ, ছাগল ক্রয় করে লালন পালন শুরু করে খামারীরা। যা স্থানীয় কোরবানির বাজারের চাহিদা মিটিয়ে জেলার বিভিন্ন হাটে তোলা হবে।
দেশীয় পদ্ধতি ব্যবহার করে এবং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন খাবার ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য এই এলাকার গরু মহিষের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই খামারীরাও এবার তুলেছেন অনেক বেশি গরু ও মহিষ।
ব্যবসায়ীদের আশা এবারের হাটে আশানুরূপ দামও পাওয়া যাবে। তবে এখানকার ব্যসায়ীদের আশংকা ভারত থেকে গরু আসলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। তাই সরকারের কাছে এখানকার খামারী ও ব্যবসায়ীরা দাবি জানান যেন অন্যান্য বছরের মতো ভারত থেকে কুরবানির পশু আমদানি করা না হয়।
জেলার আশুগঞ্জের গরু খামারী মো. তাজুল ইসলাম বলেন,“ আমাদের এখানে দেশীয় পদ্ধতি ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়। গরুকে নিয়মিত খৈল, ভুষি, কুড়া এবং ভূট্টা খাইয়ে এবং নিয়মিত যত্ম করে এগুলোকে মোটা করা হয়। এটি সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে করার কারণে কোনো রকম ঝুঁকি নেই এবং খরচও হয় বেশি। তাই আমাদের দেশের কোরবানির পশুগুলোর ন্যায্য দাম পাওয়ার জন্য ভারত থেকে পশু আমদানি না করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”
আরেক খামারী মো. ইকবাল হোসেন জানান, আমাদের গরু-মহিষের ন্যায্য দাম পেতে হলে ভারত থেকে গরু-মহিষ আমদানি বন্ধ করতে হবে। যদি ভারত থেকে আমদানি করা হয় তাহলে আমাদের মারাত্মক লোকসানে পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আর খামার করা থেকে বিরত থাকা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মো. আছির উদ্দিন জানান, দেশীয় পদ্ধতিতে গরু-মহিষ মোটাতাজাকরণে আমাদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ খামারীদের সব ধরনের সহযোগিতা করছেন। গরু মোটাতাজাকরণে নিষিদ্ধ ওষধু ব্যবহার না করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকেও খামারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত সবগুলো খামারে আমাদের মনিটরিং চলমান আছে।
তিনি আরো জানান, খামারসহ বিভিন্নভাবে আসা প্রায় ৬ হাজার কোরবানির পশু আশুগঞ্জসহ এর আসপাশের কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণের জন্য মজুদ রয়েছে।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম