বগুড়ায় আগাম সরিষা চাষ: যেন হলুদের হাতছানি

451

Shorisha2016011709111720160

বগুড়া: জেলায় ফসলের ক্ষেত সরিষার ফুলে হলুদ হয়ে উঠেছে। জেলার সারিয়াকান্দি, গাবতলী, ধুনট, দুপচাঁচিয়া, নন্দীগ্রাম ও আদমদীঘি উপজেলার জমিতে সরিষার ফুল ফুটছে। ওই সব এলাকায় সরিষা ফুলে মাঠ হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। সে ফুলের গন্ধ ছড়াতে শুরু হয়েছে।

জেলায় চলতি মৌসুমে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। আরও কয়েক হেক্টর জমিতে চাষ হবে বলে জানা গেছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, এবার সময়মত সরিষা চাষ হয়েছে। আগামজাতের সরিষা যে সব এলাকায় শেষ হয়েছে সেখানে সরিষার ফুল ফুটে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। শীতকাল এখনো পুরো না হলেও আগামজাতের সরিষা চাষ হয়েছে।

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, নন্দীগ্রাম ও আদমদীঘি এলাকার চাষিরা সরিষা আবাদ বেশি করে থাকে। এবছর ভালো ফলন দেয়ে এমন জাতের উল্লেখযোগ্য পরিমান সরিষা চাষ হয়েছে। উচ্চফলনশীল জাত বেশি চাষবাস হলে কৃষি অফিসের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদিত হবে এমনটাই আশা কৃষি কর্মকর্তাদের। শুধু ফলন টার্গেটই নয় পোকাপাকড় রোগবালাই দমনে সরিষা চাষিদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

নভেম্বর মাসে সরিষা রোপণ এবং ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারি মাসের শুরুতেই ফলন ঘরে তুলবে চাষিরা। গত বছর আশানুরুপ ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় এবার বগুড়ার অধিকাংশ উপজেলায় সরিষার চাষ বেড়েছে।

বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান জেলায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। তবে আরো বেশ কিছু জমিতে চাষাবাদ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর, আদমদীঘি উপজেলায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর ও দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ২৩১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহাদুজ্জামান জানান, এ উপজেলায় ১৭শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। আরও ২শ থেকে ৩শ হেক্টর জমিতে চাষ হবে। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় অনেকেই সরিষা চাষে ঝুকে পড়ছে।

গাবতলী উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মন্তেজার রহমান জানান, গাবতলীতে ১১২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করছে কৃষকরা। এতে ১৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি সরিষা উৎপাদন হবে বলে তিনি জানান।

সারিয়াকান্দির ফুলবাড়ীর বাবু মিয়া জানান, বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করছে তারা। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল সরিষা চাষে কৃষককে পরামর্শ প্রদান ও সহায়তা করে আসছে কৃষি বিভাগ। সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে কৃষকরা ভালোই অর্থ ঘরে তুলতে সক্ষম হবে বলে তারা প্রত্যাশা করছে। অন্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষ বেশ লাভ জনক। বাড়তি ফসল হিসেবে এ অঞ্চলে সরিষা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সরিষা চাষ করে অনেক কৃষকের ঘুরছে ভাগ্যের চাকা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং সরিষার ভালো মূল্য পেলে এ অঞ্চলে সরিষা চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন কৃষিবিদরা।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, আশা করা হচ্ছে গত বছরের চেয়েও এ বছর সরিষার ভাল ফলন হবে। সময়মত চাষাবাদ, উচ্চফলনশীল জাত, আবাহওয়া অনুকূলে থাকা ও চাষিদের মাঝে জৈব সার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন