মো. জাহাঙ্গীর আলম, নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সেনবাগে টার্কি পাখি পালন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সৌদি প্রবাসী কামাল হোসেন ভূঁইয়া (৪০)।
২০১৬ সালে জীবিকার সন্ধানে আমেরিকা গিয়ে ওয়াশিংটনে দেখতে পান টার্কি পাখির খামার। সেখানে থেকে তিনি টার্কি পাখি পতি-পালনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এর পর ২০১৭ সালে তিনি ভারতের মাদ্রাজ থেকে দুই লাখ টাকা দিয়ে ২০০ পিস (টম ও হ্যান্ড) জাতের পুরুষ ও নারী টার্কি পাখি সংগ্রহ করে সেনবাগ উপজেলার ৫ নম্বর অজুর্নতলা ইউনিয়নের উত্তর মানিকপুর গ্রামে খামার গড়ে তোলেন।
বর্তমানে তার টার্কি খামারে ২ হাজার পিস টার্কি পাখি রয়েছে। ওই টার্কি খামার থেকে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২শ পিস ডিম পাওয়া যাচ্ছে। ওই ডিম থেকে তিনি ইন্টিভিটর মেশিনে সাহায্যে বাচ্চা উৎপাদন করছে। একই সঙ্গে বাচ্ছা ও বয়স্ক টার্কি পাখি বিক্রি করে বেশ আয়-রোজগার করে তিনি সাবলম্বী হয়েছে তিনি। তার খামার থেকে বাচ্চা নিয়ে ইতোমধ্যে ১০/১২টি খামার গড়ে তুলেছেন সেনবাগসহ আশপাশের শিক্ষিত ও অর্থ শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুব মহিলারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে টার্কি খামারী পরিদর্শনে গেলে সৌদি প্রবাসী কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, তিনি প্রতিটি ১৫ থেকে ৩০ দিনে বাচ্চা বিক্রি করেন ৭শ টাকা ও ২ মাসের প্রতিটি বাচ্চা বিক্রি করেন ২৫শ টাকা।
অপরদিকে মাংসের প্রতিকেজি টার্কি তিনি বিক্রি করেন ৬শ থেকে ৭শ টাকায়। প্রতিটি টার্কি ৮ থেকে ২৮ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। টার্কির ক্রেতা ঢাকা ও চট্টগ্রামের অভিজাত হোটেল -রেস্তোরাঁ যেমন-হোটেল শেরাটন। ঢাকা থেকে ক্রেতারা গাড়ি নিয়ে এসে টার্কি পাখিগুলো নিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, এই পাখিগুলো পতিপালন একেবারে সহজ। বালুভর্তি ফ্লোর সেডে থাকতে অভ্যস্ত। এগুলো খাদ্য হচ্ছে সবুজ ঘাস ও লতাপাতা এবং পোল্টি ফিড। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক পাখি প্রতিদিন একশ গ্রাম খাদ্য খায়। এর মধ্যে সবুজ ঘাস ৮০ ভাগ।
তিনি আরো জানান, গ্রামের মা-বোন ও শিক্ষিত-অর্থ শিক্ষিত বেকার যুবকরা এই পাখি পালন করে সহজেই সাবলম্বী হতে পারে। যেনম একজোড়া বাচ্ছা টার্কি পাখির মুল্য ১৪শ টাকা। তিন মাসে ওই বাচ্চা পাখিটির ন্যুনতম ওজন ৩ কেজি তা হলে পাখিটির মূল্য দাঁড়বে ৭শ টাকা হারে ২১শ টাকা ৬ মাসে প্রতিকেজি টার্কি ৫ হাজার ৬শ টাকা। এছাড়াও প্রতিটি টার্কি ৬ মাস বয়স থেকে ডিম দেয়া শুরু করে যা টানা ৬ মাস পর্যন্ত ১৮০টি ডিম দেয়। প্রতিটি ডিমের মূল্য ২শ টাকা।
তিনি আরো জানান, টার্কি খামারিদের নিকট থেকে তিনি পাখিগুলো ক্রয় করে বিক্রির ব্যবস্থা করেন। এবং ডিমগুলো বিনামূল্য ইন্টিভিটর মেশিনে ফুটিয়ে খামারিদের সরবরাহ করেন। টার্কি খামারি কামাল হোসেন ভূঁইয়া ৪ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন