সারা বিশ্বেই ব্লার্ড ফ্লু একটি আতঙ্কের নাম। বংলাদেশে এর প্রকোপ রয়েছে, শীতকালে এবং মাঝে মাঝে অন্য সময়ে এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
শনিবার ঢাকায় হোটেল রিজেন্সির সম্মেলন কক্ষে ওয়াপসা বাংলাদেশ শাখা আয়োজিত “Symposium on Avian Influenza Vaccination and Survillance” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ সর্তকর্তার কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, এই ব্লার্ড ফ্লু /এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জাকে রুখতে হলে সমন্বিত ভাব সঠিক পরিকল্পনা, বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সঠিক বায়ো সিকিউরিটি নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা ও সার্ভিলেন্সের মাধ্যমে এখনই এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জাকে থামাতে হবে।
ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াপসা) বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ডা. বিশ্বজিৎ রায়ের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
এছাড়া বক্তব্য দেন-ওয়াপসা বাংলাদেশের সভাপতি মো. সামসুল আরেফিন খালেদ, ডা. মো. গিয়াস উদ্দিন, ন্যাশনাল রেফারেন্স ল্যাব ফর এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ইন বাংলাদেশের প্রধান, জার্মানীর অধ্যাপক ডা. টিম হার্ডে, এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) বাংলাদেশের প্রধান ডা. এরিক ব্রাম ও অধ্যাপক আব্দুর রহমান ওমার।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পের বর্তমান অবস্থা এবং এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন ওয়ার্ড পোল্ট্রি এসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মো. শামসুল আরেফিন খালেদ।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেই বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। ভালো ভেটেরিনারি প্রাকটিস, ভালো ব্যবস্থাপনা, বায়োসিকিউরিটি এবং খামার থেকে বাজার পর্যন্ত পর্যাপ্ত হাইজিন রক্ষা করতে হবে।
[metaslider id=”9498″]
বাংলাদেশ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা গবেষণাগারের প্রধান গবেষক ডা. গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার নিয়ন্ত্রণ অবস্থার ওপর আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, এখন কবুতর, হাঁস, কোয়েল এবং টার্কিও ব্লার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই ল্যাবকে আধুনিক করে গবেষণা বাড়িয়ে নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের চেষ্টা করতে হবে।
বিশ্বে বর্তমানে হাই প্যাথোজেনিক এবং লো প্যাথজেনিক ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ওপর আলোচনা করেন, জার্মানীর বিখ্যাত গবেষক ও অধ্যাপক ডা. টিম হার্ডে।
তিনি বলেন, ডায়াগনস্টিক সিস্টেম উন্নত করতে হবে। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা নির্ণয়ে মোলিকুলার ডায়াগনোসিস খুব অল্প সময় ভালো ফল প্রদান করে। তাই মলিকুলার সিস্টেমের ব্যবহার বাড়াতে হবে। রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পর্ণ হলে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
বাংলাদেশে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সার্ভিলেন্স নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে ফুড এবং এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) বাংলাদেশ প্রধান ডা. এরিখ ব্রাম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোল্ট্রি খামার থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত বায়োসিকিউরিটি মেনে চলতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি 3- zone Biosecurity নিয়ম অনুসরণ করার কথা বলেন। প্রয়োজন অনুযায়ী লাল অঞ্চল, হলুদ অঞ্চল এবং সবুজ অঞ্চল হিসাবে বায়োসিকিউরিটি মেনে চলতে হবে।
মলিকুলার এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার বিভিন্ন টাইপের মলিকুলার ইপিডেমিওলজি নিয়ে আলোচনা করেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্ন উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী। পোস্টার প্রেজেন্টশান এবং উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্টিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, অরুন কুমার, অতিরিক্ত সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভাপতি মো. মশিউর রহমান ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ডা. নাথু রাম সরকার।
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ড ভেটেরিনারি পোল্ট্রি এসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
এই আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ওয়াপসা বিবি’র সদস্যসহ দেশের গন্যমান্য ভেটেরিনারিয়ান এবং গবেষকরা।
সিভাসু’র ১৫তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন সম্পন্ন
বিএবি’র নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএস