নওগাঁয় গরুর খামার করে মামুনুর এখন স্বাবলম্বী

625

গরুর খামার

নওগাঁ : জেলায় এক শিক্ষিত যুবক গরুর খামার গড়ে তুলে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছেন। এখন তিনি আর চাকরি পেতে আগ্রহী নয় বরং তার এ খামারটি আরও সম্প্রসারিত করে উজ্জল ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠিত করতেই আগ্রহী। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে অনেক এগিয়েও গেছেন তিনি।

নওগাঁ সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের মো. সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে মো. মামুনুর রশিদ। নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে ২০১৪ সালে ডিগ্রি পাস করেছেন। ডিগ্রি পাস করে সাধারনত সবাই একটি সরকারি চাকরি পাওয়ার প্রত্যাশায় চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্ত্র মামুনুর রশিদ সে চেষ্টা না করে বাড়িতে গরুর খামার গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে একটি দুগ্ধবতী গাভী ক্রয় করে তার যাত্রা শুরু করেন। তার ব্যবসায়ী বাবা ও চাচার সহযোগিতায় গাভীর লালন পালন করতে থাকেন।

ওই গাভী প্রতিদিন ১০ লিটার করে দুধ দিতে থাকে। দুধ বাজারজাত করে তার আয় শুরু হয়। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর প্রবল বাসনা তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। মাত্র এ তিন বছরে তার খামারে এখন গরুর সংখ্যা ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১০/১২টি। তার গরুগুলোর মধ্যে আছে ফ্রিজিয়ান জাতের, সিন্ধি জাতের এবং দেশী জাতের। এসব গরুর বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে ১৬ লাখ টাকা। অথ্যাৎ ১টি গাভী দিয়ে যার যাত্রা শুরু তার এখন সম্পদের পরিমান ১৬ লাখ টাকা। তার এ অভাবনীয় সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই এগিয়ে আসতে চান গরু পালনে।

এখন মামুনুর রশিদের খামারে প্রতিদিন দুধ উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৫০ লিটার করে। এসব দুধ নিজেই প্যাকেটিং করে বাজারজাত করছেন। মাতৃস্নেহ নামে ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে প্যাকেটিং করে বাজারজাত করছেন তার খামারে উৎপাদিত দুধ। নিজ গ্রাম পাহাড়পুর এলাকাসহ নওগঁ জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার দোকানসমূহে দুধ সরবরাহ করে থাকেন। ইতিমধ্যেই মাতৃস্নেহ দুধ ব্যপক পরিচিতি লাভ করেছে।

প্রতি লিটার দুধ ৬০ টাকা হিসেবে প্রতিদিন দুধ বিক্রি করেন প্রায় ৩ হাজার টাকা। গরুর খাবার, কর্মচারীদের মজুরী অন্যান্য বাবদ প্রতিদিন খরচ হয় ২ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন তাঁর নিট লাভ থাকে ১ হাজার টাকা। সেই হিসেবে মাসে ৩০ হাজার টাকা। যখন গাভীর সংখ্যা আরও বাড়বে তখন এ আয় বৃদ্ধি পাবে। ফলে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না।

মামুনুর রশিদ বলেছেন, এ কার্যক্রমে তার বাবা মা সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকেন। এ খামার সম্প্রসারিত করাই এখন তার একমাত্র স্বপ্ন। ভবিষ্যতে কখনও চাকরির পিছনে ছুটবেন না তিনি।

নওগাঁ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার সাহা বলেছেন বর্তমান সরকার হাঁস মুরগি, গবাদি পশু পালনের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠভাবে উৎসাহিত করছে। যারা এ উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকারিভাবে তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এমন কি প্রশিক্ষণ শেষে তাদের পুঁজি গড়ে তোলার জন্য ঋণ প্রদান করার ব্যবস্থাও রয়েছে। মামুনুর রশিদ যদি সহযোগিতা চায় তাহলে তার খামার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাসস।

Rafid

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন