হবিগঞ্জ: জ্যৈষ্ঠ মাসকে বলা হয় মধু মাস। কারণ প্রচন্ড গরমে চারদিকে পাকতে শুরু করে আম-কাঁঠাল। তবে এবার মধু মাস এবং রমজান মাস এক সাথে হয়ে পড়ায় ফল ব্যবসায়ীরা তেমন একটা লাভবান হবেন না বলে আশংকা করছেন। কারণ রমজান মাসে জাতীয় ফল কাঁঠালের চাহিদা থাকে কম। আবার রমজানের পর অধিকাংশ বাগানের কাঁঠাল এক সাথে পেকে যাবে বলে দাম থাকবে কম।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ফয়জাবাদ পাহাড়ে দেখা গেছে চারিদিকে শুধু কাঁঠাল গাছ সেখানকার বাগানের মালিক আরজু মিয়া জানান, তার বাগানে লেবু,কাঁঠাল এবং চম্পা কলার আবাদ হয়। তার ভাইয়েরও বাগান রয়েছে সেখানে। তিনি জানান, ওই পাহাড়ে দেড়শ’ বাগান রয়েছে। সব বাগানেই কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাগানের মালিকরা কাঁঠাল আগাম বিক্রি করে দেন পাইকারের কাছে।
কাঠাল বাগান মালিক আমিনুল ইসলাম জানান, তার বাগানে ৫শ’ কাঠাল গাছ আছে। তিনি আগাম আড়াই লাখ টাকায় পাইকারের কাছে কাঠাল বিক্রি করেছেন। পাইকার এ কাঁঠাল অন্তত ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করবে।
হবিগঞ্জের সবচেয়ে বড় ফলের পাইকারী বাজার মুছাই। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি আড়ত। এই আড়তে বিক্রির জন্য কৃষকরা তাদের কাঁঠাল নিয়ে আসেন। প্রতি ১শ’ হিসাবে নিলামের মাধ্যমে এই কাঠাল বিক্রি হয়। মুছাই থেকে ট্রাক ভর্তি হয়ে দেশের বিভন্ন স্থানে চলে যায় এই কাঁঠাল। এখন বিদেশেও যাচ্ছে হবিগঞ্জের কাঁঠাল।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তোফায়েল খান রউফ জানান, সরকারী ভাবে অত্যন্ত পুষ্টিকর কাঠাল ফলের ফলন বাড়ানো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কৃষকদেরকে আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাঁঠাল উৎপাদন করলে একই সাথে ফসল এবং কাঠ পাওয়া যায়। কাঁঠাল গাছের পাতা থেকে শুরু করে কাঁঠালের প্রতিটি অংশ ব্যবহার করা যায় বলে অন্যন্য ফলের তুলনায় এটি লাভজনক। এছাড়ও কাঁঠাল উৎপাদনে তেমন যত্নেরও প্রয়োজন হয় না। একটি গাছ বহু বছর পর্যন্ত ফলন দেয়। তবে বন্যা মুক্ত এলাকায় কাঠালের বাগান করা উচিত। কারণ দীর্ঘদিন এই গাছ পানি সহ্য করতে পারে না।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবছর কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার ১২ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল উৎপাদন করা হয়েছে। উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম