আলু খেতে নাভিধসা (লেট ব্রাইট) রোগ দেখা দেওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে রংপুরের চাষিদের। চিন্তায় কৃষি বিভাগও। রোগের প্রতিকারে কী ধরনের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে, তা নিয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকদের সচেতন করার জন্য এক সপ্তাহ আগে থেকে গোটা জেলায় লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু চাষিদের অভিযোগ, ওষুধ প্রয়োগ করেও খেতের আলু গাছের পচন ঠেকানো যাচ্ছে না। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘলা আকাশ, কুয়াশা আর মাঝে মধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির কারণেই আলু খেতে নাভিধসা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রথমে আলুগাছের পাতা, ডগা ও কাণ্ডে ছোট ভেজা দাগ পড়ে। ক্রমে দাগ বড় হয়ে যায়। এরপর সমগ্র পাতা, ডগা ও কাণ্ডের কিছু অংশ ঘিরে ফেলে। ধীরে ধীরে আলুগাছ কুঁকড়ে গিয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। জেলার তারাগঞ্জ, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, বদরগঞ্জ উপজেলায় নাভিধসা রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এস এম আশরাফ আলী বলেন, নাভিধসা রোগ প্রতিরোধ হিসেবে আলু চাষিদের ছত্রাকনাশক রিডোমিল, মেলোডি ডুও, সিকিউর, অ্যাক্রোবেট যে কোনো একটি ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সাত দিন পরপর স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রোদ থাকলে সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, আলুপ্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত রংপুর জেলা চলতি মৌসুমে ৫৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। লালমনিরহাটের বিভিন্ন খেতে আলু গাছ বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই পাতা ধূসর আকার ধারণ করছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে এবার জেলায় আলুর ফলন হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার আমবাড়ী গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। সবমিলে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬০-৭০ হাজার টাকা। হঠাৎ খেতে পাতা পচা শুরু হয়েছে। আশপাশের খেতেরও একই অবস্থা। ওষুধ প্রয়োগ করেও সুফল মিলছে না। ফুলগাছ গ্রামের আবু তালেব জানান, তার আলু গাছের পাতা পচন ক্রমেই বাড়ছে। সদর উপাজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, চাষের শুরুতে অতিমাত্রায় ইউরিয়া ব্যবহার এবং ঘন কুয়াশাসহ আবহাওয়াজনিত কারণে সাধারণত আলু খেতে লেট ব্রাইটের আক্রমণ হয়ে থাকে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় ও করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সূত্র: বা.প্র