কুমিল্লা থেকে: পাঁচ জাতের কালো ধান চাষ করে আলোচনায় এসেছেন কুমিল্লার কৃষক মনজুর হোসেন। নতুন প্রজাতির এসব ধান দেখতে এলাকার মানুষ ভিড় করছে তার জমিতে। বিভিন্ন দেশ থেকে বীজ সংগ্রহ করে আনা এসব ধানের ভালো ফলন পেয়ে বেশ উত্ফুল্ল মনজুর।
জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে বেগুনি পাতা ধানের ২৫০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করেন মনজুর। সেখান থেকে বীজধান উৎপাদনের পর আবাদ করে সফল হন। এবার আমন মৌসুমে বিভিন্ন মাধ্যমে জাপান, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও ভারতের আসামে উৎপাদিত পাঁচ জাতের কালো ধান সংগ্রহ করে বীজ উৎপাদনের জন্য জমিতে চাষ করেছেন। তার একই জমিতে এখন কালো, সোনালি, বেগুনি ধান নজর কাড়ছে সবার।
মনজুর বলেন, শুরু থেকেই কৃষি কর্মকর্তারা ফসলের তদারকিসহ আমাকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী মৌসুমে বড় পরিসরে চাষ করে এ মূল্যবান ধানের জাত দেশের কৃষকের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হবে।
আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালেকুর রহমান বলেন, মনজুরের জমিতে ধানের গাছগুলো আমনের অন্যান্য ধানের মতোই বেশ পরিপুষ্ট হয়েছে। ভালো ফলন হবে বলেই মনে হচ্ছে। তার এ ধরনের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা ও আগ্রহ থেকে কৃষিতে এক নতুন মাত্রা সংযোজন হলো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারী বলেন, বিদেশি কালো চালের পাঁচ জাতের ধান চাষ করেছেন কৃষক মনজুর। এরই মধ্যে ধান পেকেছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে কাটা হবে।
কালো ধানের গুণাগুণ সম্পর্কে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ফল প্রকল্পের পরিচালক ও ধান বিশেষজ্ঞ ড. মেহেদী মাসুদ বলেন, মূলত এসব জাতের ধানের রঙ সোনালি বা কালচে হয়। তবে চাল একেবারে কুচকুচে কালো। এ চাল অনেক উপকারী। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম, অর্থাৎ কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম। পুষ্টিসমৃদ্ধ এ চাল কৃষি অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালো চালে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, হৃদপিণ্ডের সুস্থতার জন্য উপকারী, শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়, আঁশযুক্ত হওয়ায় হজমে সহায়ক, প্রাকৃতিকভাবে গ্লুটেনমুক্ত শস্য, রক্তে চিনির শোষণমাত্রা হ্রাস করে। ফলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধী ক্ষমতা রয়েছে। তাছাড়া সাদা চাল বা পরিশোধিত ময়দার তুলনায় এটি স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে বেশি কার্যকর।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন