কাঁচা মরিচের গুঁড়ো উদ্ভাবন করলেন রাবি শিক্ষক

410

গবেষক-রাবি-শিক্ষক-মঞ্জুর-হোসেন-(1)

ইলিয়াস আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার: কাঁচা মরিচের গুঁড়ো উদ্ভাবন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মনজুর হোসেন। নাম দেয়া হয়েছে ‘গ্রিন চিলি পাউডার’। এই পাউডারের রঙ কাঁচা মরিচের রঙের মতোই। কোন কেমিক্যাল ছাড়াই প্রস্তুত এ কাঁচা মরিচের গুড়ো কাঁচা মরিচের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এতে কাঁচা মরিচ না খেয়েও এর পুরো পুষ্টিগুণ পাবে মানব শরীর।

বাংলাদেশের খাদ্য তালিকায় রান্নার কাজে অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় কাঁচা মরিচ। যেকোনো ধরনের তরকারি, সালাদ কিংবা অন্য কোনো খাদ্যে কাঁচা মরিচ অপরিহার্য একটি উপাদান। নিত্য প্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল হওয়ায় পণ্যটি বাজার বা দোকান থেকে কিনতে হয় সবাইকে। মানুষ এখন যান্ত্রিক জীবনে অভ্যস্ত। বাজার থেকে কাঁচা মরিচ কিনে রান্না পর্যন্ত প্রক্রিয়াটা অনেকেই ঝামেলা মনে করেন।

প্রায় দুই বছর গবেষণা শেষে কাঁচা মরিচের গুঁড়ো উদ্ভাবন করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মনজুর হোসেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনজুর হোসেনের নেতৃত্বে ও জাপানি অধ্যাপক মিস্টার কিনজি টিসুজি তত্ত্বাবধানে দুই বছর আগে এ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। রাজশাহীর কাটাখালী এলাকার ক্যান্সার হাসপাতাল সংলগ্ন আলো আশার স্কুলে চলে এই গবেষণা। তাদের এই গবেষণায় সঙ্গে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান। কোনো ধরনের কেমিক্যালের ব্যবহার না করায় গুড়ার রঙ, গন্ধ, স্বাদেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। আর এটা মানবদেহের জন্যও ক্ষতিকর নয় বলে স্বীকৃতি দিয়েছে বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ। তরকারি রান্নার সময় অন্যান্য গুড়ার মতো নির্দিষ্ট পরিমাণ ছিটিয়ে দিলেই কাজ শেষ। নেই কাটাকাটির ঝামেলা।

উদ্ভাবিত এ গুঁড়োয় ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান। গবেষকদের একটি টিম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সার্ভে করে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছেন। এ গুড়াকে বাণিজ্যিকভাবে রফতানি করা গেলে দেশের জিডিপিতেও ভালো অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদী।

ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান বলেন, আমার জানা মতে বিশ্বে এই প্রথম আমরাই এ গুঁড়ো উদ্ভাবন করেছি। এটি নিশ্চয় আমাদের জন্য আনন্দের। বাণিজ্যিকভাবে এ গুঁড়ো ছড়িয়ে দেয়া গেলে আমরা যেমন লাভবান হবো তেমনি দেশের রফতানিতে এটি ভালো অবদান রাখবে। বিশেষ করে এ মরিচের গুঁড়োকে কেন্দ্র করে যদি কোনো কোম্পানি বা নতুন মার্কেট গড়ে উঠে তাহলে অনেক গরিব মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।

অধ্যাপক মনজুর হোসেন বলেন, শুকনা মরিচের গুড়া খেলে অনেকের আলসারের সমস্যা হয়। তাছাড়া শুকনা মরিচের গুঁড়োয় তেমন কোনো পুষ্টিগুণ থাকে না; যেটা কাঁচা মরিচের গুঁড়োয় থাকে। কাঁচা মরিচকে আমরা ডি হাইড্রেশন করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এ গুঁড়োটা তৈরি করি। এটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি-৬’ রয়েছে। উপরন্ত এর উচ্চশক্তির ক্যাপসাইসিন মেদ কমায় এবং কোলেস্টরল বৃদ্ধি কমিয়ে হৃৎপি-কে সুরক্ষা করে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন