এ পদ্ধতিতে পুকুরে মাছ পাতলা করে চাষ করা হয়। সাধারণ পদ্ধতিতে বেশি মাছ পুকুরে ছেড়ে সামান্য বড় হতেই বাজারজাত করা হয়। কিন্তু ‘কার্প ফ্যাটেনিং’ পদ্ধতিতে মাছ পুকুরে পাতলা করে চাষ করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রতি বিঘায় ১৫০ থেকে ২০০টি রুই, সিলভার কার্প ও কাতলা ৫০টি করে, মিরর কার্প ২৫ থেকে ৩০টি, মৃগেল ১৫০টি ও গ্রাস কার্প ৫টি (অর্থাৎ প্রতি শতকে রুই ৪.৫-৬ টি, সিলভার কার্প ও কাতল ১.৫ টি, মিরর কার্প ০.৭৫-১টি, মৃগেল ৪.৫ টি, গ্রাস কার্প ০.১৫ টি) করে চাষ করা হয়। পুকুরে সাধারণত যে পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয় তাতে প্রতি বিঘায় এ সংখ্যার তুলনায় ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি মাছ চাষ করা হয়। ‘কার্প ফ্যাটেনিং’ পদ্ধতিতে মাছের পোনা নির্ধারণ করাই মুখ্য বিষয়। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে হলে পোনাকে নির্ধারিত মজুদ হারের চেয়ে অধিক ঘনত্বে (চাপে) একটি পুকুরে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। অতি চাপে মাছের পোনা একটি পুকুরে ৭ থেকে ৮ মাস রাখা হয়। এরপরে পোনাগুলো ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজন হলে ‘কার্প ফ্যাটেনিং’ পদ্ধতিতে নির্ধারিত সংখ্যায় মাছ অন্য পুকুরে ছাড়া হয়। অল্প মাছের জন্য বেশি করে সুষম খাবার দেয়া হয়। এ পদ্ধতিতেই মাছ ৬ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে। স্টকিং সাইজ এবং পুকুরে চাষে রাখার সময়, এই দুটো বিষয়ে চাষি ভেদে ভিন্নতা থাকে। ছাড়ার সময় মাছের ওজন সাধারণত ৫০০ গ্রাম থেকে ১/২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবার চাষিভেদে এই মাছ ১ থেকে দেড়/দুই বছর পর্যন্ত রেখে চাষ করে থাকেন।
বর্তমান সময়ে এ পদ্ধতিতে নতুন একটি প্রক্রিয়া যোগ করেছে রাজশাহী অঞ্চলের চাষিরা। ‘কার্প ফ্যাটেনিং’ পদ্ধতিতে কার্প জাতীয় মাছের সঙ্গে মনোসেক্স জাতীয় তেলাপিয়া মাছ চাষ করা হচ্ছে। এটি ‘কার্প ফ্যাটেনিং’ এর নতুন একটি পদ্ধতি। আমেরিকান কৃষি বিভাগের সহায়তায় “সিফ (SEAF) বাংলাদেশ এগ্রিভেঞ্চার লিমিটেড” কয়েকজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে কয়েকমাস এ অঞ্চলের চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়। এরপরই চাষিরা পুকুরে কার্প মাছের সঙ্গে মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষে দক্ষ হয়ে ওঠে। এতে কার্প জাতীয় মাছের পাশাপাশি বিঘায় প্রায় ২ হাজারটি মনোসেক্স তেলাপিয়া পুকুরে চাষ করা হয়। অত্যন্ত অবাক করা বিষয়টি হচ্ছে, এ তেলাপিয়া মাছ একেকটি বছর শেষে এক কেজি ওজনের হয়ে থাকে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/৩১অক্টোবর২০