এসএম জামাল, কুষ্টিয়া থেকে: জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চালকল মালিক, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ী এমনকি আমদানিকারকদেরও ফুডগ্রেন লাইসেন্সের আওতায় নেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে কুষ্টিয়া খাদ্য বিভাগ।
এরই মধ্যে সকল মিল মালিক, খুচরা ও পাইকার ব্যবসায়ী এবং আমদানিকারকদের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে এ সংক্রান্ত চিঠি, গেজেট পরিপত্র।
কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ তানভীর রহমান জানান, চলতি মাসের শুরুর দিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত গেজেট এসেছে। তাতে বলা হয়েছে জেলার সকল চালকল মালিক, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের এমনকি আমদানিকারকদেরও ফুডগ্রেন লাইসেন্স’র আওতায় আসতে হবে।
তিনি আরো জানান, মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নে এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার সকল উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে চিঠি। প্রাথমিক পর্যায়ে সকলের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে ১ হাজার ব্যবসায়ী লাইসেন্সের আওতায় এসেছেন। আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আশা করেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রত্যেকেই এই লাইসেন্সের আওতায় আসবেন।
তিনি মনে করেন লাইসেন্সের আওতায় আসলে ধান কিংবা চালের সঠিক মজুদের পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। কেউ অবৈধ মজুদ করলে তা ধরা সম্ভব হবে।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান জানান সরকারের এমন সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। আমাদের কুষ্টিয়ায় বিপুল পরিমাণ চালকল রয়েছে। ব্যবসায়ীর সংখ্যাও অনেক। সবাই লাইসেন্সের আওতায় আসলে চালের সঠিক হিসেব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
কুষ্টিয়া শহরের পৌরবাজারে পাইকার ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন, বহু আগে আমাদের নির্দেশনা দেয়া ছিল চালের সঠিক মজুদের হিসেব খাদ্য বিভাগকে অবহিত করার কিন্তু বর্তমানে তা হয় না। সম্প্রতি খাদ্য বিভাগ থেকে আমাদের হাতে চিঠি এসেছে। লাইসেন্সের আওতায় আসলে চালের সঠিক হিসেবটাও তারা পাবে। বিষয়টিকে তিনি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন তিনি।
একই বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী বাবুল আজাদ জানান, এ বিষয়ে তিনি একটি চিঠি পেয়েছেন। যেহেতু আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি লাইসেন্স করে ফেলবেন বলেও জানান।
তবে কিছু কিছু ব্যবসায়ী ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। তাদেরই একজন নিশান আলী। তিনি খুচরা বিক্রির জন্য সামান্য পরিমাণ চাল বিক্রি করেন। যা ১ টনেরও অনেক কম। কিন্তু খাদ্য বিভাগ থেকে তার হাতেও চিঠি ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অবশ্য খাদ্য কর্মকর্তা জানান, নিয়মের বাইরে কোন কিছুই করবেন না। নিয়মের মধ্যে থেকেই সব কিছু করা হবে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে লাইসেন্সের বিষয়ে যথেষ্ট সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে সরকারের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কুষ্টিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) আহ্বায়ক রফিকুল আলম টুকু। তিনি মনে করেন এর ফলে চালের মজুদের পরিমাণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য থাকবে সরকারের কাছে। তবে এ বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম