কৃষিপ্রধান অনেক দেশে উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়। সে তুলনায় পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ, বিপণন ইত্যাদি ধাপ অনেকটাই অবহেলিত থেকে যায়। যেহেতু কৃষিপণ্যের সাপ্লাই চেইনে পণ্যের উৎপাদন থেকে বিপণন হয়ে ভোক্তার হাতে পৌঁছা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ সমান গুরুত্বপূর্ণ, তাই শুধু উৎপাদনে জোর আরোপের প্রবণতা কৃষির অগ্রগতির বড় একটি অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত হয়। এ সমস্যার সমাধানে উৎপাদনকারী ও ভোক্তাদের মধ্যকার সহজ ও সাবলীল যোগাযোগ স্থাপনকে কার্যকর উপায় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এ চিন্তা থেকেই নেদারল্যান্ডসের একদল গবেষক কৃষিপণ্যের উৎপাদনকারী ও ভোক্তার মধ্যে দূরত্ব ঘোচাতে নতুন এক সমাধান সামনে নিয়ে এসেছেন পোমেরন নামের এক ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে। প্লাটফর্মটি উৎপাদনকারী ও ভোক্তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়ে কৃষিপণ্যের সাপ্লাই চেইনকে আরো সহজ ও কার্যকর করতে সক্ষম বলে দাবি করছেন তারা।
এ প্রকল্পের প্রবক্তা রন মুলডার্স জানান, কৃষিপণ্যের সাপ্লাই চেইনে উৎপাদনকারী ও ভোক্তাদের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকে। অনেক সময়ই উৎপাদনকারীরা জানেন না, তারা কাদের জন্য কৃষিপণ্য উৎপাদন করছেন। এমনকি ভোক্তারাও পণ্যটির উৎস সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন। তারাও জানেন না যে কার উৎপাদিত কৃষিপণ্য গ্রহণ করা হচ্ছে। এর ফলে কৃষিপণ্যের সাপ্লাই চেইন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। অনেক সময় এর প্রভাব পড়ে পণ্যের দামেও। উৎপাদনকারী ও ভোক্তার মধ্যকার এ ব্যবধান ঘোচানো সম্ভব হলে একদিকে যেমন কৃষিপণ্যের সাপ্লাই চেইন আরো সহজ ও কার্যকর হবে, তেমনি উভয় পক্ষের জন্যই পণ্যটির ন্যায্য মূল্যপ্রাপ্তির পথও সুগম হবে। এ চিন্তা থেকেই পোমেরনের যাত্রা শুরু।
পোমেরন প্লাটফর্মের মূল লক্ষ্য কৃষিপণ্যের সাপ্লাই চেইনকে সহজ, কার্যকর ও সংক্ষিপ্ত করে আনা। এতে পারস্পরিক যোগাযোগের ভিত্তিতে ভোক্তারা সরাসরি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কিনতে পারবেন। এর ফলে কৃষিপণ্যের হাতবদল কমে আসবে। কমবে দামও। যেসব দেশের কৃষিতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বেশি, সাপ্লাই চেইনে তাদের প্রভাব কমতে শুরু করবে। সরাসরি যোগাযোগ থাকায় ভোক্তা ও উৎপাদনকারীরা পণ্যের মান ও প্রাপ্ত সেবার বিষয়ে কথা বলতে পারেন। অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময় করতে পারেন। এতে উভয় পক্ষের জন্যই কৃষিপণ্যের মান ও দামের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে সুবিধা হয়।
এ বিষয়ে রন মুলডার্স বলেন, পোমেরন কৃষিপণ্যের উৎপাদনকারী ও ভোক্তাকে একই ছাতার নিচে আনতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়, পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ে এবং তথ্যের আদান-প্রদান ঘটে। উৎপাদনকারী ও ভোক্তা—একে অন্যের মনোভাব সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভ করেন। এ পরিস্থিতি কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ থেকে শুরু করে পুরো বাজার ব্যবস্থায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।সূত্র: বিবি
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন