সরকার দেশের সকল মানুষের জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ সুষম খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এজন্য শস্য বহুমূখীকরণ,উন্নত ও আধুনিক কলাকৌশল অবলম্বন,বিভিন্ন ফসলের উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাত প্রতিস্থাপন জরুরী। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিযোজন যোগ্য প্রতিকূলতা সহিষ্ণু বিভিন্ন ফসল ও ফসলের জাত আবাদ সম্প্রসারণ করা অপরিহার্য।
কৃষি মন্ত্রণালয় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও নয়টি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে চলতি অর্থ বছরে পরিবার প্রতি সর্বোচ্চ ১ বিঘা জমির জন্য বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার (ডিএপি ও এমওপি) পরিবহণ ব্যয় বাবদ নগদ অর্থ প্রদানের প্রণোদনা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। নয়টি ফসল হচ্ছে গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, শীতকালীন মুগ, পেঁয়াজ ও পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মুগ ও গ্রীষ্মকালীন তিল।
কৃষি মন্ত্রী ড.মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি তার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে খরিপ-১/২০১৯-২০২০ মৌসুমের কৃষি প্রণোদনা প্রদান কার্যক্রম উপলক্ষে আয়োজিত প্রেসব্রিফিং এসব কথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, বর্তমান খরিপ-১ মৌসুমে গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, শীতকালীন মুগ, পেঁয়াজ ও পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মুগ ও গ্রীষ্মকালীন তিল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ৬৪ টি জেলায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩শ ৯১ হেক্টর জমিতে আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭ শত জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে ৮০ কোটি ৭৩ লক্ষ ৯১ হাজার ৮ শত টাকার বিনামূল্যে বীজ, সার ও পরিবহন ব্যয় বাবদ নগদ অর্থ প্রদান করা হচ্ছে।
প্রতি কৃষক এক বিঘা জমিতে গম চাষের জন্য বীজ,ডিএপি ও এমওপি সারসহ সর্বসাকুল্য ১ হাজার ৯শ ৯০ টাকা। ভুট্টা চাষের জন্য ১ হাজার ৩শ ১৮ টাকা; সরিষা চাষের জন্য ৮ শ২ টাকা; র্সূযমুখী চাষের জন্য ২ হাজার ৮শ ১৬ টাকা; চীনাবাদাম চাষের জন্য ১ হাজার ৫শ ৭৫ টাকা; গ্রীষ্মকালনি তিলচাষের জন্য ৮শ ৮ টাকা; শীতকালনি মুগডাল চাষের জন্য ১ হাজার ১০ টাকা; গ্রীষ্মকালিন তিল চাষের জন্য ৮ শ ৮ টাকা; পেয়াজ চাষের জন্য ১ হাজার ৭ শ ১৪ টাকার উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হবে । এর ফলে তৈল,ডাল জাতীয় ফসলের আমদানি নির্ভরতা কমবে,কিছু কিছু ক্ষেত্রে রপ্তানি করা যাবে।
প্রস্তাবিত এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে ৩৪ হাজার ৯ শত ৭১ মেট্রিক টন গম; ৩ লক্ষ ২০ হাজার ৯ শত ৮২ মেট্রিক টন ভূট্টা; ৪২ হাজার ১৫ মেট্রিক টন সরিষা; ৮ শত ৪৫ মেট্রিক টন সূর্যমুখী; ২ হাজার ৪ শত ১৮ মেট্রিক টন চিনাবাদাম ; ৩ হাজার ৬ শত ৭ মেট্রিক টন চিনাবাদাম; ৬ হাজার ৯ শত ৭৪ মেট্রিক টন শীতকালীন মুগ ; ৪ হাজার ৬ শত ৪৫ মেট্রিক টন গ্রীষ্মকালীন মুগ; ১১ হাজার ৫ শত ৩২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে।
সর্বোপরি প্রস্তাবিত এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে এতে প্রায় ৮৪০ কোটি ২৯ লক্ষ ৩৪ হাজার ২ শত ৯১ টাকা আয় হবে এবং প্রাক্কলিত ব্যয় হবে ৪৫৯ কোটি ১১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৬১ টাকা। এতে প্রতি ১ টাকা খরচ করে আয় হবে ১.৮৩ টাকা। এছাড়াও প্রণোদনার আওতায় চাষিদের নিকট উৎপাদিত উন্নত জাতের গম, গ্রীষ্মকালীনমুগ, শীতকালীন মুগ,সরিষা,তিল, চিনাবাদাম বীজ সংরক্ষিত থাকবে যা পরবর্তী বছর সংশ্লিষ্ট চাষিসহ প্রতিবেশী চাষিগণ ব্যবহার করতে পারবেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন; কৃষি পণ্যের ন্যায্য মুলের ব্যাপারে সরকার আন্তরিক; এর একটি স্থায়ী সমাধান কিভাবে করা যায় তা সবাইকে বেড় করতে হবে। কৃষককে লাভবান না করা গেলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবেনা,তা মোটেো কাম্য নয় । যে কোন ফসল আহরনের সময় ঐ জাতীয় ফসল আমদানি বন্ধ রাখা হবে। আর্ন্তজাতিক বাজারে চালের দাম কম বিধায় চাল রপ্তানি করা যাচ্ছে না, তবে আফ্রিকায় রপ্তানির জন্য কাজ করা হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়রে সচিব মো: নাসিরুজ্জামান;অতিরিক্ত সচিববৃন্দ ও মন্ত্রণালয়রে ঊর্ব্ধতন কমর্কতাবৃন্দ।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ