মো. নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি সংবাদদাতা : ভালো নেই ঝালকাঠির চাই-বুচনা প্রস্তুতকারীরা। এখানকার খালবিলে এখন আর আগের মতো মাছ মেলে না। তার ওপরে এবছর পানি দেরিতে এসেছে তাই মাছ আরো কম। যে কারণে কমে গছে চাই-বুচনার চাহিদা।
যারা সারা বছর বর্ষ মৌসুমের অপেক্ষায় থাকে চাই-বুচনা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করার জন্য এ বছর তারা হতাশ। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বাঁশসহ চাই-বুচনা তৈরির উপকরণ কিনেছিলেন বাজারে চাহিদা না থাকায় তারা যেমন বিপদে পড়েছেন তেমনি ক্ষতির সন্মুখিন হচ্ছেন পাইকাররা বা মহাজনরা।
ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার সড়ই গ্রামের মোতালেব মিয়া ৩০ বছর ধরে বুচনা (এক ধরনের মাছ ধরার ফাঁদ) তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। নিজের পূঁজি না থাকায় মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বাঁশসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে বুচনা তৈরি করেন। মহাজনরূপী পাইকাররা এজন্য বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামে এসব বুচনা কিনে নেন। কিন্তু চিংড়ি, বেলে, পুঁটি, খলিসা, কই, শিং, ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশিয় মাছ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। তার ওপর বেশিরভাগ খাল-বিলে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এবং পানি দেরিতে আসায় আগের মতো মাছের আনাগোনা নেই।
কয়েক বছর আগেও বর্ষাকালে দক্ষিণাঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বিল জলে টইটুম্বুর হয়ে গেলে জলের সঙ্গে ভেসে বেড়াত হরেক রকমের মাছ। এসব মাছ শিকার করার জন্য অপেক্ষকৃত সহজ কৌশল চলাচলের পথে চাই কিম্বা বুচনা পেতে রাখা। কিন্তু এ বছর মাছ না মেলায় যারা চাই-বুচনা পেতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের আগ্রহ কমে গেছে। যে জন্য বাজারে এসব পণ্যের চাহিদা এবং দাম দুটোই কম।
আগে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই জেলার হাট বাজার গুলোতে চাই-বুচনা কেনার ধুম পরে যেত, এ বছর তা নেই। মোতালেব মিয়ার মতো জেলার কয়েকশ কারিগররা চোখে অন্ধকার দেখছেন। কীভাবে মহাজনদের দাদন পরিশোধ করবেন আর কীভাবে সারা বছর খেয়ে পরে বেঁচে থাকবের এমন চিন্তায়।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি বিসিক শিল্প সহায়ক কেন্দ্রে যোগাযোগ করা হলে উপ-ব্যাবস্থাপক, বিসিক, মো. জালিস মাহমুদ জানান, তারা চাই-বুচনা প্রস্তুতকারীদের পূঁজি সংকট সমাধানে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন