গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন রোগ প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব

401

গোটপক্স-ভ্যাক্সিন-দিয়ে-গবাদিপশুর-660x330
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেছেন, গোটপক্স ভ্যাক্সিন দিয়ে গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন রোগ-প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আগারগাঁও পিকেএসএফ ভবনে অনুষ্ঠিত ‘Impact of Lumpy Skin Disease on Livestock Production and its Controlling Measures in Bangladesh’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় গোটপক্স ভেক্সিন দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫ লক্ষ গোটপক্স ভ্যাক্সিন মাঠ পর্যায়ে প্রদান করা হয়েছে।

রোগটির প্রাদুর্ভাব রোধ করতে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনের চেষ্টা করছে বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতন এ কর্মকর্তা।

কর্মশালায় জানানো হয়, সম্প্রতি দেশের গরু, মহিষ ইত্যাদি প্রাণী লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি)-এর ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। এলএসডি হলো বসন্ত রোগের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট এক ধরনের সংক্রামক রোগ।

এ রোগে আক্রান্ত প্রাণীর নানাবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে যা খামারীদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পিকেএসএফ-এর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ইউনিট এলএসডি-এর প্রভাব এবং তা কার্যকরভাবে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ২৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে একটি কর্মশালা আয়োজন করে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম তৌহিদ।

সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ এক সময় গবাদি পশুর জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের ওপর নির্ভরশীল ছিলো। তাঁদের রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত এদেশের জন্য আশির্বাদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

গোটপক্স ভ্যাক্সিন দিয়ে গবাদিপশুর

টেকসই ভাবে দারিদ্র্য বিমোচনে গবাদিপশু পালন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এই রোগের প্রাদুর্ভাব যেন এই খাতের উন্নতিকে বাধাগ্রস্থ করতে না পারে সেই লক্ষ্যে খামারি পর্যায়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি জোর দেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, এ রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনের চেষ্টা করছে।

তবে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় গোটপক্স ভেক্সিন দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫ লক্ষ গোটপক্স ভ্যাক্সিন মাঠ পর্যায়ে প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রাথমিকভাবে গরু, জলা মহিষ, জিরাফ ইত্যাদি প্রাণী লাম্পি স্কিন ডিজিজ-এ আক্রান্ত হয়ে থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশে এর সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে।

কর্মশালায় জানানো হয়, আক্রান্ত প্রাণীর চামড়া ও চামড়ার নিচে গোলাকার গোটা দেখা দেয়, আক্রান্ত প্রাণী শুকিয়ে যায় এবং চামড়ার ক্ষতি হয়। সাধারণত উষ্ণ ও আর্দ্র মৌসুমে এই রোগ বেশি দেখা দেয়। দেশে আগামী বৃষ্টি ও বন্যার সময় এ রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেতে পারে বলে কর্মশালায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন আলোচকরা।

অনুষ্ঠানে ইমপেক্ট অফ লাম্পি স্কিন ডিজিজেস অন লাইভস্টক প্রোডাকশন এন্ড ইটস্‌ কন্ট্রোলিং মেজারস্‌ ইন বাংলাদেশ- শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিএলআরআই) এর প্রাণিস্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ গিয়াস উদ্দিন।

প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বিএলআরআই-এর মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার।

প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অর্জনে পিকেএসএফ-এর ভূমিকার ওপর উপস্থাপনা প্রদান করেন ড. শরীফ আহম্মদ চৌধূরী, মহাব্যবস্থাপক পিকেএসএফ।

গোটপক্স ভ্যাক্সিন দিয়ে গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন রোগ-প্রতিরোধের উদ্যোগ আরও দ্রুত নেয়া উচিত ছিলো মত প্রকাশ করেন কর্মশালায় উপস্থিতরা।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৫জানু২০২০