তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা থেকে: দিগন্ত জুড়ে নজর কাড়ছে সাড়িবদ্ধ গাছ। সেই গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে গাঢ় সবুজ পেঁপে। বাণিজ্যিকভাবে এই পেঁপে চাষ করেন রইচ উদ্দিন আখা।
তার বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার বড় জামালপুর গ্রামে। আখা মিয়ার স্বপ্ন ছিল, পেঁপে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। কিছুটা হলেও পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবেন। কিন্ত তার সেই স্বপ্ন যেন স্বপ্নই রয়ে গেল। চলতি বর্ষার টানা বৃষ্টিতে পেঁপেক্ষেত সবুজ থেকে হলুদ বিবর্ণ হয়ে গেছে। অধিক পানি জমাটের কারণে নষ্টের দিকে ধাবিত হচ্ছে আখা মিয়ার পেঁপেক্ষেত।
পেঁপে চাষি রইচ উদ্দিন আখা মিয়া বলেন, “আর্থিকভাবে লাভের আশায় আমি এক বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছি। এসময় স্থানীয় এক এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পেঁপে চারা রোপন করি। এ জমিতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। যার উৎপাদিত ফসলের মূল্য হতো প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। কিন্ত চলমান বর্ষায় পেঁপে গাছগুলো মড়ক ধরেছে। বর্তমানে ওই ক্ষেত থেকে ১০ হাজার টাকা পেঁপে বিক্রি সম্ভব নয়। ফলে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নির্ঘুম রাত পোহাতে হচ্ছে।”
শুধু আখা মিয়াই ক্ষতিগ্রস্ত নয়, উপজেলার আলমঙ্গীর মন্ডল, জহির মিয়া, আনছার আলীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পেঁপেচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এবারে পেঁপে চাষ করে পথে বসেছেন আরও অনেক কৃষক।
সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. ফজলে এলাহী জানান, এ এলাকার পেঁপে খুবই জনপ্রিয়। শুধুমাত্র ফল নয়, সবজি হিসেবেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পেঁপেতে প্রচুর ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি আছে। পরিচর্যা করলে সব ধরনের মাটিতেই পেঁপে চাষ করা যায়। সাধারণত এক বছরের মাথায় পেঁপে গাছে ফল ধরে। একটি গাছে বছরে ৫০ থেকে ৬০টি ফল ধরে। সেই হিসেবে এক বিঘা জমিতে বছরে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার পেঁপে ধরে। খরচ বিঘা প্রায় ৩০ হাজার টাকা চারা ৩০০ প্রতি গাছে প্রায ২ মণ পেঁপে ধরে। যা খুবই লাভজনক। তবে আখা মিয়ার পেঁপেক্ষেত নষ্টের পথে তা আমার জানা নেই। সরেজমিনে গিয়ে পরামর্শ প্রদান করা হবে।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম