রপ্তানিযোগ্য ফসলের মধ্যে চা অন্যতম। বাংলাদেশে চা চাষ শুরু হয়েছিল প্রায় ১৬৩ বছর পূর্বে। রপ্তানির লক্ষ্যকে সামনে রেখেই চা চাষ শুরু হয়। চলতি বছরে যে চা উৎপাদন হয়েছে তাতে মনে হয় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে যাবে এমনটাই আশা করছে উৎপাদন বিশেজ্ঞরা। চা কোম্পানীর মালিকগণ নিজেদের ব্যবসা বাড়াতে এদেশের মানুষ যাতে চা পানে আগ্রহী হয় সে জন্য নানামূখী প্রণোদনামূলক ও প্রচারনামূলক পদক্ষেপ নেয়। যাতে চা পানের অভ্যাস গড়ে ওঠে এদেশের নাগরিকদের মধ্যে। তার পরও উৎপাদিত চায়ের সিংহভাগই রপÍানি করা হতো। কিন্তু এক দশক আগে দেশের চায়ের চাহিদা বৃদ্ধি এবং উৎপাদন হ্রাস হওয়ায় রপ্তানির পরিবর্তে চা আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।
তারপর থেকে চায়ের উৎপাদন বাড়াতে নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়। তারপর থেকে কয়েক বছর ধরে বছরে প্রায় ১৩ লাখ কেজি চা বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। গত বছর দেশে চা উৎপাদনে দেশে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। উৎপাদিত হয় ৬৭.৩৮ মিলিয়ন কেজি চা। চলতি বছরে দেশের ১৬৩ বছরের চা উৎপাদনের সব রেকর্ড ভেঙ্গে উৎপাদন ৭০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত বছর জুন পর্যন্ত দেশের ১৬২ টি চা বাগানে চা উৎপাদন হয়েছিল ১৭.২২ মিলিয়ন কেজি । চলতি বছরের একই সময়ে উৎপাদন বেড়ে দাড়িয়েছে ২৫.৩৮ মিলিয়ন কেজি ্বছরের শেষ পর্যন্ত উৎপাদনের এ ধারা ঠিক থাকলে তা গত ১৬৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের রেকর্ড বলে বিবেচিত হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্য ,যুক্তরাষ্ট্র ,ফ্রান্স ,সুইজারল্যান্ড, কুয়েত, ওমান, সুদান, পাকিস্তান, ভারত, পোল্যান্ড, রাশিয়া ,ইরান, আফগানিস্তান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, বেলজিয়ামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চা রপ্তানি হচ্ছে। উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় চা রপ্তানির পরিমানও বেড়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। দেশে সিলেট বিভাগ ও পার্বত্য চটÍগ্রামের পাশাপাশি পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে অর্গানিক পদ্ধতিতে চায়ের চাষ হচ্ছে এবং এ চা বিদেশী ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষন করতে সমর্থ হয়েছে। চা উৎপাদন বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির জন্য সুখবর বলে বিবেচিত হচ্ছে। এ সাফল্যকে ধরে রাখতে চা উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্টদের আরও বেশী উদ্দ্যেগী হতে হবে। দেশে চায়ের যে সুনাম রয়েছে তা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। চা উৎপাদন বৃদ্ধি প্রান্তিক চা চাষি ও চা শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নতি যাতে নিশ্চিত হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবাই নজর দিবেন এমনটিও প্রত্যাশিত।