ছাগলকে গরিবের গাভী বলা হয়। গরিব-অসহায় মানুষ ছাগল পালন করে বাড়তি আয় করে থাকেন। ছাগল গরিবের আপদ-বিপদের বন্ধু। ছাগল পালন করতে তেমন খাদ্য খরচ নেই। দেশে দুধ, ডিম ও পোলট্রির উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে ছাগলের উৎপাদন তেমন বৃদ্ধি পায়নি।
লক্ষণ :
আক্রান্ত প্রাণীর ক্ষুধামন্দা, ঘনঘন শ্বাস-প্রশ্বাস, পানিশূন্যতা, উদাসীনভাব, চলাফেরায় দুর্বলতা, মারাত্মক পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। থুতলির নিচে পানি জমা হতে পারে। মিউকোজা ফ্যাকাশে দেখাবে। ছোট বাছুর ও ভেড়া আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে ও বিশেষ করে লক্ষণ দেখা দেয়ার ১৫-২০ দিন পর মারা যায়।
প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমি আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ক্ষেত্রে পশুর ওজন কমে যায়, রক্তশূন্যতা চামড়া শুকিয়ে যায়, উৎপাদন কমে যায়, পশুর থুতনির নিচে পানি জমা হয়। এভাবে রোগ ভোগের কিছু দিন পর আক্রান্ত পশুর মৃত্যু ঘটতে পারে অথবা ধীরে ধীরে সেরে ওঠতে পারে।
রোগ নির্ণয় :
রোগ লক্ষণ ও অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পশুর মল পরীক্ষা করলে বড় আকারের পরিষ্কার, স্বচ্ছ, অপারকুলামযুক্ত ডিম দেখা যাবে। কিন্তু মারাত্মক আকারের ক্ষেত্রে মল পরীক্ষা করে ডিম নাও পাওয়া যেতে পারে। Fluid feces পরীক্ষা করলে অপ্রাপ্ত কৃমি পাওয়া যাবে। মৃত প্রাণীকে ময়নাতদন্ত করে রোগ নিশ্চিত হওয়া যায়।
চিকিৎসা :
১. Niclosamid = ১০ mg/kg, Bithional = ২৫ mg/kg – শুধুমাত্র ভেড়ার ক্ষেত্রে কার্যকর।
২. গরুর ক্ষেত্রে – Resorantul = ৬৫ mg/kg ও Oxyclozanid দিয়ে চিকিৎসায় প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক কৃমিতে ৯০% কার্যকরি।
৩. Carbontetrachlorid এবং Hexachlorlethane -শুধু প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমির বিরুদ্ধে কার্যকর।
৪. ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।
প্রতিরোধ : ১. যেসব এলাকায় প্রতি বছর পাকস্থলীর কৃমি সংক্রমণ ঘটে, সে এলাকায় নিয়মিত চিকিৎসা দিতে হবে, যাতে করে প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমি ধ্বংস হয়ে যায়।
২. নিচু জলা ভূমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং শামুক নিধনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৫জানু২০২০