বড় দুঃসময় পার করছি আমরা যারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খামার মালিক, ফিডমিল মালিক, হ্যাচারি মালিক, মেডিসিন কোম্পানি মালিক, কেমিস্ট, পরিবেশক এবং এই শিল্পের সাথে জড়িত লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ। ৯০ এর দশক থেকে তিল তিল করে গড়ে উঠা প্রাণিসম্পদের এ বৃহৎ শিল্পটি আজ বড় অসহায়। যাদের কাছে আমরা আশা করি কিছু একটা করার তাদের নিরব ভূমিকা এ সমস্যা কে আরও প্রকট করে তুলেছে। আর এ সমস্যাটা বাণিজ্যিক লেয়ারের ক্ষেত্রে বেশি বেশি প্রযোজ্য।
দেশের চাহিদা খতিয়ে না দেখে এবং মাথাপিছু গড় ডিম খাওয়ার জটিল সব হিসাব নিকাশ মাথায় নিয়ে অপরিকল্পিতভাবে লেয়ার প্যারেন্ট আমদানিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ার ফল হলো আজকের এই করুণ দশা। একদিন বয়সী লেয়ার বাচ্চার দাম উঠা নামার কারণও এই অপরিকল্পিত লেয়ার প্যারেন্ট আমদানি।
এখানে আমি আমার ২০১২ সালের জুলাই মাসে ‘ভেটসবিডি’তে প্রকাশিত তথ্যটি তুলে ধরছি-
(অপরিকল্পিত ভাবে প্যারেন্ট স্টক আমদানি করাই হলো একদিন বয়সী লেয়ার বাচ্চা ও ডিমের মূল্য উঠানামা করার মূল কারণঃ প্রকাশকাল-৬ জুলাই, ২০১২।
সংবাদ লিংক-
https://vetsbd.com/blog/2012/07/06/%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A
6%95%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%A4-
%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87-
%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8%
E0%A7%8D/
সাল লেয়ার প্যারেন্ট
২০০৬ – ৩,৩০,০০০
২০০৭ -৩,৫০,০০০
২০০৮ – ২,৭৬,০০০
২০০৯ – ৪,৩০,০০০
২০১০ – ৪,৭৫,০০০
২০১১ – ৩,৫০,০০০
এই টেবিলের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ২০০৬ সালে ৩,৩০,০০০ প্যারেন্ট আমদানি হয়েছিল। ২০০৭ সালে মার্চে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমিত হলেও প্রায় ৩,৫০,০০০ প্যারেন্ট আমদানি করা হয়।২০০৬, ২০০৭ সালে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারনে ডিম ও বাচ্চার মূল্য অত্যধিক কমে যাওয়ায় ২০০৮ সালে হ্যাচারি মালিকরা ভয়ে ভয়ে মাত্র ২,৭৬,০০০ প্যারেন্ট আমদানি করেছিলেন। এর মাঝে আবার এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারনে অনেক হ্যাচারি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ২০০৮ ও ২০০৯ সালে লেয়ার বাচ্চা কম পাওয়ায় চাহিদার তুলনায় ডিমের উৎপাদনও কমে যায়।
২০০৮ সালের প্যারেন্টের এই ঘাটতির কারনেই ২০০৯ ও ২০১০ সালে ডিমের দাম কিছুটা ভাল থাকে। তাই খামারীরা আবার লেয়ার বাচ্চা উঠানো শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় লেয়ার বাচ্চার সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে বাচ্চার দামও ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ওই সময়ে সরকার না বুঝেই একদিন বয়সী লেয়ার বাচ্চার দাম ৩২ টাকা নির্ধারণ করলেও তা কার্যকর হয়নি। কারণ বাজারে সরবরাহ কম থাকলে নিয়মনীতি দিয়ে কোন কাজ হয় না।এই দাম বাড়ার প্রবণতা দেখে পুরনো হ্যাচারিগুলো ছাড়াও বেশ কিছু নতুন হ্যাচারির উদ্ভব হলো। আর যার পর নাই প্যারেন্ট আমদানি শুরু করে দিল।
লক্ষ্য করুন ২০০৯ সালে আমদানিকৃত প্যারেন্টের সংখ্যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় ৫৬% বেশি এবং ২০১০ সালে তা আরও প্রায় ১১% বেড়ে দাঁড়ালো ৪,৭৫,০০০ এ।
অপরদিকে এই দুই বছরে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে মুরগির খুব একটা সমস্যাও হয়নি। যার কারণে বর্ধিত এই প্যারেন্টস্টক হইতে উৎপাদিত একদিন বয়সী লেয়ার বাচ্চা ও ডিমের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় বেশি হয়ে গেল। আর তাই ২০১১ সাল বছরব্যাপি লেয়ার বাচ্চার দাম ১০-১৫ টাকায় এবং ডিমের দামও প্রতিটা ৪.৫০ টাকায় নেমে এল। এই সময়ে সরকারের নির্ধারিত ৩২ টাকায় কেউ বাচ্চা বিক্রয় করতে পারেনি। তাই ২০০৯-১০ এ যারা নতুন ভাবে হ্যাচারি প্রতিষ্ঠা করেছিল তারা ব্যাপকহারে লোকসান গুনতে শুরু করলো। এই কারণে ২০১১ সালে প্যারেন্ট আমদানি কমে গিয়ে আবার ৩,৫০,০০০ এ দাঁড়াল।
এই যখন অবস্থা, তখন ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে দেখা দিল এবং তা ২০১২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকলো। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে ২০১২ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৪৭% বাণিজ্যক খামার ও ৫৯% লেয়ার ব্রিডার ফার্ম বন্ধ হয়ে গেল। একদিকে প্যারেন্ট কম আনা হলো অন্যদিকে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে অনেক প্যারেন্ট শেষ হয়ে গেল। আবার ২০১১ সালের শেষের দিকে কিছু বড় বড় হ্যাচারি প্যারেন্ট আমদানির আবেদন করলেও মন্ত্রণালয় থেকে দেরিতে অনুমতি প্রদান করায় সমস্যা আরও বেড়ে গেল। ফলাফল যা হবার তাই হলো, বর্তমানে একদিন বয়সী লেয়ার বাচ্চার দাম যেমন আকাশচুম্বি, তেমনি ডিমের দামও অনেক বেশি। তাই এই প্যারেন্টের প্রয়োজনের তুলনায় কম বেশি হওয়ার কারণেই আজকে বাচ্চা ও ডিমের দাম কম বেশি হচ্ছে। আমদানি করেও স্থিতিশিল রাখা যাচ্ছে না।
এবার আসি কী পরিমাণ লেয়ার প্যারেন্ট আমদানি হওয়া দরকার। আমাদের দেশে মোটামুটি ৪,০০,০০০ প্যারেন্ট প্রতিবছর নিয়মিত আমদানির ব্যবস্থা করতে পারলে এই সংকট তৈরি হবে না। প্রতি বছর ১০% করে বৃদ্ধি করে প্যারেন্ট আমদানির ব্যবস্থা নিলে আগামী দিনে তা ভোক্তা ও উৎপাদনকারী সকলের জন্য মঙ্গলজনক হবে। আমাদের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যেহেতু আমদানির অনুমোদন দিয়ে থাকে, তাই তারাই এর প্রকৃত সংখ্যা নিরুপন করে ব্রিডার ফার্ম মালিকদের উৎসাহিত করবেন যাতে করে প্রতিবছর যেন প্রয়োজন অনুসারে প্যারেন্ট আমদানি করা হয়। তাহলে বাচ্চার উৎপাদন বছরব্যাপি প্রায় একই ও সহনীয় পর্যায়ে থাকবে এবং ডিমের মূল্য সঠিক থাকবে। সবাই লাভবান হবেন। সরকারও সমালোচিত হবে না।
এই বিষয়টি যদি সরকার সঠিকভাবে করতে পারে,তাহলে ডিম ও বাচ্চার দাম বছরের পর বছর একই হারে থাকবে। যদি কোন কারণে হ্যাচারি মালিকরা আমদানিতে অনিহা প্রকাশ করে তবে সরকার নিজেই আমদানি করে বাচ্চার বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারে। তবে ২০১২ সালে ইতোমধ্যে প্রায় ২,০০,০০০ প্যারেন্ট আমদানি করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। আশা করি সরকার ও হ্যাচারি মালিকরা এই বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখবেন এবং আগামী ২০১৩ সালের শেষের দিকে আবার খামারীরা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।)
উপরিউক্ত লেখাটি আমার ২০১২ সালের লেখা।
২০১৩-১৪ সালে মুটামুটি ডিমের বাজার ভালো ছিল। ১৫-১৬ তে খাদ্যের দাম কিছুটা কমার কারণে মার্কেট স্থিতিশীল ছিল। ফলে এই সময়ে ডিম উৎপাদনে অনেক বড় বড় উদ্যোক্তার জন্ম হলো এবং একই সাথে যারা বড় ছিল তারা তাদের বাণিজ্যিক ডিম উৎপাদন আরও বাড়িয়ে দিল। এই সময়ে পুরনো খামার চালুসহ নতুন নতুন আরও বহু খামার গড়ে উঠল। স্বাভাবিক কারণেই লেয়ার বাচ্চার ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত চাহিদা বেড়ে গেল, দাম ১০০-১২০ টাকা হয়ে গেল, একটা সময় বাচ্চা পাওয়াই যাচ্ছিল না এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। ফলে আবারও ছোট বড় হ্যাচারি গড়ে উঠল, প্যারেন্ট আমদানি শুরু হলো। এই লেয়ার প্যারেন্ট আমদানি ২০১৫ সাল থেকেই ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছর বেড়েছে এবং ডিমের দামও তুলনামুলক ভাল থাকাতে উদ্যোক্তারা দেশের প্রকৃত ডিমের চাহিদার কথাই ভুলে গেলেন। এর মাঝে আবার রপ্তানি করার আশ্বাস পাওয়ায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়তে লাগলো।
কিন্তু একটা বিষয় আমাদের মাথায় কখনও আসলো না আসলে আমাদের দেশে মোট কত ডিম দরকার আর এর জন্য কত লেয়ার প্যারেন্ট দরকার। আর এই চিন্তাটা কখনও প্রান্তিক খামারীরা করবে না। এটা করতে হবে যারা নীতি নির্ধারণীতে আছেন তাদের। এখানে উল্লেখ করতে পারি, আজ থেকে ৩-৪ বছর আগেও জানি মাথাপিছু ডিম ৫৫-৬০টি, তখন প্যারেন্ট ছিল প্রায় ৫ লাখ, তাহলে এই ডিম গ্রহণের পরিমাণ যদি ১০৪টিতে যায় অর্থাৎ উন্নত দেশের মতো হয় (যদিও আমরা নিম্ন মধ্যবিত্ত) তবুও ৯ লাখের বেশি লেয়ার প্যারেন্ট দরকার নাই। এর বেশি প্যারেন্ট আসলে উৎপাদিত ডিম দেশের বাইরে রপ্তানি করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে দেশে এখন সর্বোচ্চ চাহিদার চেয়েও উৎপাদন বেশি। তারই একটা বাস্তব হিসাব নিকাশ তুলে ধরছি।
এবার আসি আসলে আমাদের কী পরিমান ডিম দরকার এবং সেই অনুযায়ী লেয়ার ও লেয়ার প্যারেন্ট কত হওয়া উচিৎ।
আমাদের দেশের একজন মানুষ যদি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা হিসাব অনুযায়ী সপ্তাহে ২টি করে অর্থাৎ বছরে ১০৪টি করে ডিম খায় তাহলে সপ্তাহে মোট ডিমের প্রয়োজন ৩২ কোটি (জনসংখ্যা ১৬ কোটি ধরে)। এই ৩২ কোটি ডিম উৎপাদন করতে প্রতিদিন ডিম উৎপাদন দরকার ৪ কোটি ৫৭ লাখ। এই পরিমান ডিম উৎপাদন করতে লেয়ার মুরগি দরকার ৫ কোটি ৭১ লাখ ২৫ হাজার (গড় উৎপাদন ৮০% ধরে)। এই ৫ কোটি ৭১ লাখ ২৫ হাজার মুরগি সারা বছর ডিম পাড়া অবস্থায় রাখতে হলে বছরে মোট একদিন বয়সী লেয়ার বাচ্চা দরকার ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার (এর মধ্যে ২ কোটি ৮৬ লাখ লেয়ার পুলেট অবস্থায় থাকবে)। এই ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার লেয়ার বাচ্চা উৎপাদন করতে আমদানিকৃত বছরে লেয়ার প্যারেন্ট বাচ্চা দরকার ১০ লাখ ২৮ হাজার যার মধ্যে ৬ লাখ ৮৬ হাজার উৎপাদনে থাকবে (১২৫টি লেয়ার বাচ্চা/প্যারেন্ট)।
তাহলে কী দাঁড়ালো। যদি আমরা প্রত্যেকে বছরে ১০৪টি করে ডিম খাই (যদিও সরকারি হিসাবে ৯০-৯৫ আর বেসরকারি হিসাবে ৬৫-৭০টি ডিম) তাহলে আমাদের দেশে ১ দিন বয়সী লেয়ার প্যারেন্ট দরকার ১০ লাখ ২৮ হাজার। আর অন্যান্য ডিম যদি ১০% ধরি তাহলে সর্বোচ্চ প্যারেন্ট দরকার ৯ লাখ ২৫ হাজার।
আমার জানামতে, ২০১৭ সালে দেশে লেয়ার প্যারেন্ট আসছে প্রায় ১২ লাখের বেশি এবং লেয়ারের জিপিও এসেছে। এই জিপি থেকেও আরও লেয়ার প্যারেন্ট আমদানিকৃত প্যারেন্টের সাথে যোগ হয়েছে। তাহলে আজকে আমরা যারা ডিমের প্রকৃত চাহিদা, উৎপাদন ও ডিম খাওয়ার পরিমাণ এবং এর বহুমুখি ব্যবহার নিরূপন না করে ধুম ধারাক্কা লেয়ার প্যারেন্ট আমদানি করছি, যারা সব সময় ব্রয়লার প্যারেন্ট করতাম তারাও কিছু কিছু লেয়ার প্যারেন্ট আমদানি শুরু করলাম-এখন কি হবে? যারা বড় তাদের গত ২ বছরে যা আয় হয়েছে তাতে ২০১৮ সাল পুরাটা দাম না পেলেও চলবে। কিন্তু যারা বেশি দামের আশায় কোন রকম হিসাব নিকাশ ছাড়াই প্যারেন্ট আনলাম, খামার করলাম, ফিডমিল দিলাম, হ্যাচারি করলাম, মেডিসিন কোম্পানি দিলাম, তাদের এই লোকশান কি কখনো পূরণ হবে? তারা কি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? সুন্দর সোনালি স্বপ্নে বিভোর হয়ে ডিমে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করবো-কিন্তু একই হাল? একই চিত্র?
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ও কিছু করার নাই। কারণ তাদের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার কোন আইন নাই। বড়দের ছাড় দিতেই হয় কারণ তারা বড়, এ শিল্পের যত উন্নয়ন তারাই করে যাচ্ছে! আর ছোটদের তো আমদানিতে উৎসাহিত করতেই হয় কারণ এ শিল্পের বিকাশ ঘটাতে হবে। সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আমার এতোগুলো কথা কারো পড়ার সময় হয়তো হবে না, তবুও বলছি-আজকে সময় এসেছে এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে সরকারি-বেসরকারি, ছোট বড় সকল সংস্থা একীভুত হয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে হবে। যে কমিটি দেশের লাখ লাখ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে, ডিম, মাংস, দুধের প্রকৃত চাহিদা নিরূপন করে সেই অনুযায়ী ব্রয়লার জিপি, ব্রয়লার ও লেয়ার প্যারেন্ট, উন্নত জাতের গরু আমদানি করার অনুমোদন দিতে হবে।
উৎপাদিত ডিম, মাংস, দুধের দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে যাতে উৎপাদনকারী ও ভোক্তা উভয়েই লাভবান হয়। আর যারা বড় আকারে করবেন তাদের অবশ্যই বিদেশে রপ্তানি করার নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং সেইভাবেই তাকে উৎপাদন করতে হবে যাতে বিদেশে রপ্তানি করতে কোন সমস্যা না হয়। মনে রাখতে হবে আমরা এখনও উন্নত জাতিতে পরিণত হতে পারিনি, আমাদের অর্থনীতি এখনও কৃষি ও প্রাণিসম্পদ নির্ভর। দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ
এখনও গ্রামীণ কৃষি, পোল্ট্রি ও গবাদি প্রাণির ওপর নির্ভরশীল। দেশের লাখ লাখ নারী-পূরুষ, যুবসমাজকে বেকারত্বের হাত থেকে বাঁচাতে সরকারের এবং সেক্টরের বিভিন্ন সংস্থাকে এক যুগে কাজ করার সময় এসেছে। আর এটা না করতে পারলে মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা শেষ হয়ে যাবে এবং সেই সাথে সাথে এদের সাথে জড়িত লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। আর তখন বড় বড় ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো নিজেদের ইচ্ছে মতো
বাংলাদেশের মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করবে। আমার এই লেখা আমার একান্ত মতামতের প্রতিফলন এবং ১৫ বছর ধরে সেক্টরে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। এতে কেউ কোন প্রকার কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি। আমি একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হয়ে আকুল আবেদন-এর একটা সুন্দর সমাধান চাই। ধন্যবাদ।
লেখক: ডা. সারোয়ার জাহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সেইফ বায়ো প্রডাক্টস লিমিটেড।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন