জেনে নিন পেয়ারার অসাধারণ পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

902

পেয়ারা

পেয়ারা বর্ষা মৌসুমের ফল হলেও প্রায় সারাবছরই এটি বাজারে পাওয়া যায়। এছাড়া  অন্যান্য ফলের তুলনায় এর পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। বিশেষ করে ভিটামিন ‘সি’ এর পরিমাণ এত বেশি যে আমলকী বাদে অন্য কোনো ফলে এত ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায় না।

তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক পেয়ারার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।

পেয়ারার পুষ্টি গুনাগুণ:

এটি একটি পুষ্টিকর ফল। ফলটিতে রয়েছে  প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি । অন্যান্য সাইট্রাস ফল, যেমন—কমলালেবুর তুলনায় পেয়ারায় ৫ গুণ বেশি ভিটামিন-সি রয়েছে।

রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন। সেইসঙ্গে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড এবং নিকোটিনিক অ্যাসিড।পেয়ারায় ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-বি কমপ্লেক্সও পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় রয়েছে ১৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ক্যালরি ৭, ভিটামিন-এ ২৫০ আই ইউ, থিয়ামিন ০.০৭ গ্রাম, নিয়াসিন ১.২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৩০২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৯ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.১ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম।

পেয়ারার স্বাস্থ্য উপকারিতা সমূহ:

অনেকে পেয়ারাকে একটি সাধারণ ফল মনে করে অবহেলা করে খেতে চাননা। তবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান ও ওষধি গুণাগুণ জানার পর তারাও ফলটি খেতে উৎসাহিত হবেন। নিম্নে ফলটির কিছু উপকারী দিকসমুহ আলোচনা করা হলো।

  • রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে।
  • উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে হার্টকে সুস্থ রাখতে: গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে আসে।
  • ডায়াবেটিস প্রতিরোধে: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারার বিশেষ ভুমিকা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে পেয়ারার রসে ও পেয়ারা পাতায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উপাদান থাকায় ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই এটি খুবই কার্যকর।
  • ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করে: বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন ব্রংকাইটিস সারিয়ে তুলতে পেয়ারার ভূমিকা রয়েছে । ফলটিতে উচ্চ পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় এটি শ্লেষ্মা কমিয়ে দেয়।
  • দৃষ্টিশক্তিবাড়ায়: কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভাল উৎস। আর এই ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • মাসিকেরব্যথা দ্রুত উপসম করতে: অনেক নারীরই মাসিক চলাকালিন পেট অনেক ব্যথা হয় এবংব্যাথার ঔষধ খেয়ে থাকেন। এ সময় যদি কেউ পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস খায় তাহলে তাঁর মাসিককালিন ব্যথা অধিকতর দ্রুত সময়ে উপসম হতে পারে।
  • ক্যান্সারেরঝুঁকি হ্রাস করে: পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

শুধু ফলেই নয় এর গাছের পাতায়ও রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ১টি করে আর না হলে সপ্তাহে অন্তত একটি করে হলেও প্রতিটি মানুষের পেয়ারা খাওয়া উচিত।