ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে চারগাছের হাট

731

চারাগাছ
মো. আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি সংবাদদাতা : চলতি বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে চারাগাছের হাট। চারা রোপণের মৌসুমে বর্ষাকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠি শহরের সিটি পার্ক সড়ক, রাজাপুর উপজেলা বাঘড়ি বাজার, নলছিটি উপজেলার ষাটপাকিয়া বাজার ও কাঁঠালিয়া উপজেলার আউড়া বাজার, বটতলা বাজার ও জমাদ্দার হাটসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বড় চারা ক্রয়-বিক্রির হাট বসে।

সপ্তাহে দু’দিন ধরে এসব হাটে বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার ঔষধি, ফলদ, বনজ ও শৌখিনসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারাগাছ। বনজ গাছ হিসেবে মেহগনি ও রেইনট্রি বিক্রি হচ্ছে বেশি। কমতি নেই ফলদ চারা গাছেরও।

এসব সবুজের হাট ঘুরে দেখা গেছে, মেহগনি ও অন্যান্য বনজ গাছের চারা ২০ টাকা হারে বিক্রি হলেও ফলদ চারা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ শুরু করে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। শৌখিন মানুষের জন্য বিদেশি জাতের মাঝারি ঝোপ গাছের চারাও পাওয়া যায় এসব হাটে। তবে সেগুলোর দাম আরও বেশি। আর এসব চারা উৎপাদন হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নার্সারিতে।

পার্শ্ববর্তী বানারিপাড়া উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অনেকগুলো নার্সারি রয়েছে। নার্সারি মালিকরা ট্রলার ও নৌকাযোগে হাটে এসব চারা নিয়ে আসেন। নিয়ে আসেন ফরিয়া বিক্রেতারাও।

শহরের সিটি পার্ক সড়কে সবুজের হাটে চারা কিনতে আসা দিয়াকুল গ্রামের কামাল হোসেন জানান, প্রতি বছর চারা গাছ কিনে নিজেদের জমিতে লাগানো হয়। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি দোকানের আড্ডায় চা-নাস্তার টাকা বাঁচিয়ে একটু বেশি করে বনজ চারা কিনে জমিতে লাগানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ঝালকাঠি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি জালাল আহমেদ রাজু জানান, চারদিকে নালা (স্থানীয় ভাষায় ব্যার) কেটে নতুন একটি বাড়ি তৈরি করেছি। বাড়ির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফলদ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এখন চারদিকে (নালার পাশে) কাগজি লেবু’র কলম রোপণ করবো। এতে মৌসুমে ভিটামিন সি’তে পরিপূর্ণ লেবু যেমন পাওয়া যাবে। তেমন আলাদা করে বেড়া দেয়ারও প্রয়োজন হবে না। কিন্তু প্রতিবছরের তুলনায় এবছর সকল প্রকারের চারা ও কলমের দাম বেশি।

চারা গাছ ব্যবসায়ী মনোতোষ জানান, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র এ তিন মাস গাছের চারা বিক্রি হয়। তিন মাসে তিনি কমপক্ষে প্রায় ১ লাখ টাকার চারা বিক্রি করতে পারবো। পরিবহন খরচ, হাটের ইজারা, শ্রমের মূল্য বেশি হওয়ায় আমাদের খরচ পোষাতে দাম গত বছরের তুলনায় এবছর একটু বেশি।

আরেক বিক্রেতা জালাল হোসেন মোল্লা জানান, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা, মৌসুমি বায়ু বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পুঁজিসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে চারা উৎপাদন এবং তার সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, পরিবেশবান্ধব গাছ থেকে আমরা অক্সিজেন এবং ফল থেকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি পেয়ে থাকি। বসত ঘরের আশপাশে ফলদ ও শৌখিন গাছ এবং ফার্নিচার তৈরির জন্য দূরের জায়গায় বনজ গাছ লাগাতে হবে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন