ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার আমন ধান উৎপাদন

42

 

ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধান রোপণ মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও আবহাওয়া খরা থাকায় কৃষকরা ধানের ফলন নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলেন। তবে কৃষি অধিদফতরের পরার্মশে এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ধানের ফলন হয়েছে বেশি। উৎপাদিত এই ধানের বর্তমান নূন্যতম বাজার মূল্য ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তবে তারপরেও কিছু কিছু কৃষক ফলন ও দামে অসন্তুষ্ট।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের দেওয়া তথ্য মতে, আমন ধান উৎপাদনের জন্য জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন চাল। তার বিপরীতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৫০ হেক্টর ও ফলন হয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান। উৎপাদিত এই ধান প্রক্রিয়াজাত করলে ৪ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। বর্তমান ধানের নূন্যতম বাজার দর প্রতি মণ ১ হাজার টাকা অনুযায়ী এবার এই জেলায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ধান উৎপাদন হয়েছে।

আমন ধান কাটার মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কৃষাণ-কৃষাণীরা মাঠে হাতে কাস্তে নিয়ে ধান কাটতে। অনেককে আবার কাঁধে ভারে করে ও আটি বেঁধে মাথায় করে ধান আনছেন রাস্তায়। আর সেইসব ধান গাড়িতে করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ি নিয়ে গিয়ে সেগুলো মাড়াই করছেন। তবে ফসলের মাঠ থেকে আমন ধান কেটে ঘরে তোলার কাজ প্রায় শেষ। এখন ধান সেদ্ধ ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। গ্রামাঞ্চলে আমন ধান কাটার মৌসুমে এ যেন এক অন্যরকম উৎসব। যাকে বলা হয়ে থাকে নবান্ন উৎসব। এসব নতুন ধানের চালের আটা দিয়ে ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় নানান পিঠা-পুলি।

এদিকে কৃষকরা বলছেন, মোটা জাতের ধানের ফলন ভালো হলেও অনাবৃষ্টির কারণে এবার চিকন জাতের ধানের ফলন তেমন ভালো হয়নি। মোটা জাতের ধানের ফলন বিঘা প্রতি ২০-২৫ মণ পেলেও খরচের তুলনায় ধানের দাম কম পাচ্ছেন। এতে ধান চাষ করে পোষাচ্ছে না তাদের।

কৃষক লাল মিয়া বলেন, ধানের ফলন মোটামুটি ভালোই হয়েছে কিন্তু খরচের তুলনায় দামে পোষাচ্ছে না। এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করতে প্রায় ১৫-১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আর ফলন পাচ্ছি ২০-২৪ মণ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে জেলায় আমন ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে গেছে ও ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে। বর্তমানে সারের দাম সামান্য বৃদ্ধি পেলেও ধানের দাম বেশ ভালো। তাই কৃষকদের জন্য ধান একটি লাভজনক ফসল। কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান রোপণ করলে তারা আরও বেশি ফলন পাবেন।