আরডিআরএস বাংলাদেশ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় হারভেস্টপ্লাস বাংলাদেশ প্রকল্পের ব্রি ধান-৭৪ কর্তনের ওপর কৃষক মাঠদিবস ২৫ মে ২০১৭ তারিখে রংপুরের তারাগঞ্জস্থ ইকরচালী ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়।
ইকরচালী ইউনিয়ন ফেডারেশন দলনেতা মো. সাইদার রহমান এর সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক বেতার কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু সায়েম। রংপুর তারাগঞ্জের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন। রংপুর আরডিআরএসের কৃষিবিদ শামীম আহমেদ ও কৃষিবিদ নুরুজ্জামান রনি।
প্রধান অতিথি বলেন, এ ধানে প্রচুর পরিমাণে জিংক ও প্রোটিন বিদ্যমান (প্রতি কেজি চালে ২৪.২ মিলিগ্রাম জিংক ও শতকরা ৮.৩ ভাগ প্রোটিন থাকে)। জিংক মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তা বিকাশসহ নানাবিধ শরীরিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রতিদিন আমাদের শরীরে ১৬ গ্রাম জিংকের প্রয়োজন হয়। আমাদের দেশের শতকরা ৫৭ ভাগের বেশি মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে শতকরা ৪০ ভাগ জিংকের ঘাটতি রয়েছে। এ জাতের ধানের ভাত নিয়মিত খেলে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর দরিদ্র মানুষের দৈনিক জিংক চাহিদার কমপক্ষে শতকরা ৬০ ভাগ পূরণ করা সম্ভব হবে। জিংকের অভাবে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ব্যহত হয়। বিভিন্ন সংক্রামক ব্যধি যেমন- ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ধানের জাত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জিংকের অভাবজনিত অপুষ্টি লাঘবে টেকসই ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
মাঠদিবসে স্বাগত বক্তব্য দেন-রংপুরের সহকারী সমন্বয়কারী (কৃষি) আরডিআরএস বাংলাদেশের মো. মাহবুবুল আলম।
তিনি জানান, আরডিআরএস বাংলাদেশ ২০১৩ সাল থেকে হারভেস্ট প্লাস বাংলাদেশের সহযোগিতায় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বোরো এবং আমন মৌসুমে জিংক ধানের প্রদর্শনী প্লট বাস্তবায়ন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর বোরো মৌসুমে রংপুর বিভাগের চার জেলায় (রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী ও পঞ্চগড়) ৫৫০ জন কৃষকের মোট ৫৫০ বিঘা জমিতে (রংপুরে ২০০ বিঘা) নতুন জাতের ব্রি ধান৭৪ এর প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করেছে। ব্রি ধান-৭৪ একটি উচ্চ ফলনশীল জিংক ধানের জাত যার হেক্টরপ্রতি গড় ফলন প্রায় ৭.১ টন (বিঘায় ২২-২৪ মণ), জীবনকাল ১৪৭ দিন।
জগদীশপুর গ্রামের কৃষক এন্দাদুল ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে ৩০ শতক জমিতে ব্রি ধান-৭৪ রোপন করেন। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে ধান কর্তন করা হয়। তিনি ফলন পেয়েছেন ৬.৪৫ টন/হে:।
মাঠদিবসে অন্যান্যদের মধ্যে ইকরচালী ইউনিয়ন ফেডারেশনের সদস্যসহ বিভিন্ন গ্রামের তিন শতাধিক কৃষাণ-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম