নিরাপদ পোল্ট্রি পণ্য উৎপাদন করতে খাদ্যকেও নিরাপদভাবে তৈরি করতে হবে

389

pp02

নিরাপদ পোল্ট্রি পণ্য উৎপাদন করতে হলে খাদ্যকেও নিরাপদভাবে তৈরি করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন “ফিড কোস্ট চ্যালেঞ্জ: অ্যাপ্লিকেশন অব বায়োটেকনোলজিক্যাল টুলস ক্যান বি এন অ্যাপ্রোচ” শীর্ষক আলোচনা সভার বক্তারা।

তারা বলেন, দিনদিন বাড়ছে ফিড তৈরির কাঁচামালের দাম। অন্যদিকে ডিম ও ব্রয়লার উৎপাদনে ফিডের পিছনেই সিংহভাগ ব্যয় বহন করতে হয় খামারীদের। তবে ফিড ফর্মুলেশনে এবং ফিড টেকনোলোজি সম্পর্কে উচ্চ ধারণা ও এটি দক্ষতার সাথে প্রয়োগ করা গেলে ফিড উৎপাদন ব্যয়ের চ্যালেঞ্জগুলি সফলভাবেই মোকাবেলা সম্ভব।

৬ অক্টোবর শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের ৩-ডি সেমিনার হলে পোল্ট্রি ‍প্রফেশনালস বাংলাদেশ (পিপিবি) আয়োজিত এক কারিগরি আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

প্রথম পর্ব শুরু হয় সকাল ১০টায়। এসময় পিপিবি কোর টিম মেম্বার ডা. নন্দ দুলাল টিকাদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র পোল্ট্রি প্রফেশনাল ও এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. লুৎফর রহমান।

এভোনিক এসইএ পেট লিমিটেডের সিনিয়র টেকনিক্যাল সার্ভিস ম্যানেজার ডা. প্রদীপ কৃষ্ণ কারিগরি বক্তব্য বলেন, সমগ্র বিশ্বেই ফিড উৎপাদন ব্যয়ের বিষয়গুলি ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে আশার কথা হলো গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে এগুলো এখন বেশ দক্ষতার সাথেই মোকাবেলা করা হচ্ছে।

মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির পর সেমিনারে দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয়। বিশিষ্ট পোল্ট্রি কনসালট্যান্ট ও পিপিবি’র সমন্বয়ক কৃষিবিদ অঞ্জন মজুমদার সেমিনারের মূল বিষয়গুলি তুলে ধরেন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, নিরাপদ পোল্ট্রি পণ্য উৎপাদন করতে হলে খাদ্যকেও নিরাপদভাবে তৈরি করতে হবে। গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে ফিডের উৎপাদন ব্যয় কমানোর বিষয়টি চ্যালেঞ্জ মনে হলেও অসম্ভব কিছুই নয়। একটি কার্যকর টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে এ ধরনের কর্মশালা করা গেলে সকলেই উপকৃত হবেন।

গ্লোবাল মার্কেটে ভোক্তারা এখন এন্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। কাজেই মেধাবী জাতি হিসেবে পরবর্তী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে চাইলে আমাদের সকলকেই আন্তরিক হতে হবে। ভালোমানের ফিড উৎপাদন করতে চাইলে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এগিয়ে আসতে হবে।

pol

এ খাতে গবেষণা ও উন্নয়নের কাজগুলি ব্যাপক পরিসরে করার ব্যাপারে মত দেন বক্তারা।

এর পর প্যানেল ডিসকাশনে অংশগ্রহণ করেন পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞরা। তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ডা. প্রদীপ কৃষ্ণা, ডা. সনজিৎ চক্রবর্তী, কৃষিবিদ একেএম রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, রুহুল আমিন সরকার, ডা. অলোক সরকার, নিশীথ কুমার মণ্ডল প্রমুখ।

উপস্থাপনা করেন ডা. সুব্রত মালাকার (জয়) ও কৃষিবিদ নুসরাত (লিজা)। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দুই শতাধিক পোল্ট্রি পেশাদাররা অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে আগতরা জানান, খামার থেকে উৎপাদিত ডিম ও ব্রয়লারের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না খামারীরা। বছরের অধিকাংশ সময়েই দেশের পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিতে এ ধারা বিরাজমান থাকায় সেক্টরে ব্যাপক সম্ভাবনা ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আশানুরূপ ফল লাভে অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে এ ধরনের সেমিনার নিয়মিত করা গেলে এমন সমস্যাগুলো থেকে ধীরে ধীরে উত্তরণ পাওয়া সম্ভব।

তারা এ সেমিনারটি আয়োজনে পিপিবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বিশেষ অনুরোধ
করেন।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক এবং নাহার এগ্রো গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ শামছুদ্দোহা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, এজি এগ্রো’র কনসালট্যান্ট কৃষিবিদ মো. আকতারুজ্জামান, বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসীন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পিপিবি কোর টিম মেম্বার ড. স্বপন কুমার ফৌজদার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. আবু সাদেক মোহাম্মদ সেলিম, ডা. মো. মোজ্জাম্মেল হক খান এবং ডা. সনজিৎ চক্রবর্তী।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এমএস