পাটের পলিথিন

1705

83702168_2742633935814372_447666416947036160_n

‘আমি যেখানেই যাই, সেখানেই হাতে করে একগোছা পাট নিয়ে যাই।’ বলে হাসলেন মোবারক আহ্​মদ খান। বিজ্ঞানী ও গবেষক। রসায়ন ও পরমাণুবিজ্ঞান মিলিয়ে পাটকে নতুন আঙ্গিকে হাজির করেছেন আমাদের সামনে। পলিথিন কিংবা টিনের বিকল্প তৈরি করেছেন পাট দিয়ে।

চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সেই মেলায় মোবারক আহ্​মদ খানের আবিষ্কৃত পাটের ‘প্লাস্টিক’ থেকে তৈরি ‘সোনালি ব্যাগ’ রীতিমতো সাড়া ফেলেছে। পাট আর পলিমারের মিশেলে পরিবেশবান্ধব নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কারের নেপথ্যের কথা জানতে এই বিজ্ঞানীর সঙ্গে দেখা হয় ১৪ জানুয়ারি মতিঝিলে তাঁর বর্তমান কর্মস্থলে। আলাপচারিতায় জানা যায়, বিদেশে যখনই গবেষণার জন্য গেছেন, উপকরণ হিসেবে পাটকেই বেছে নিয়েছেন। কারণ, ‘এটা তো আমার নিজের’—বলেন মোবারক আহ্​মদ খান।

মোবারক আহ্‌মদ খানের চাওয়া, তাঁর আবিষ্কারগুলো মানুষের কাছে যেন সহজলভ্য হয়শুরুটা ছিল কাঠ দিয়ে মোবারক আহ্​মদ খানের সঙ্গে কথা হচ্ছিল ঢাকার মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কার্যালয়ে। তিনি এখন বিজেএমসির বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা। ওয়ান টাইম মানে একবার ব্যবহার করা যায়, এমন প্লাস্টিক পণ্য গোটা পৃথিবীর পরিবেশের জন্যই হুমকি। এর বিকল্প হিসেবে পাটের সঙ্গে মিশেল ঘটিয়ে প্লাস্টিক তৈরির কাজটা কীভাবে শুরু হয়েছিল? তিনি বলেন, ‘আমি যখন পিএইচডি করি (১৯৯১ সাল), কাঠ ও প্লাস্টিক মিলিয়ে টেকসই কিছু তৈরিই ছিল উদ্দেশ্য। তখন ভাবলাম, বিষয়টা ব্যয়বহুল হয়ে যাচ্ছে। পাট ও কাঠের রাসায়নিক বিষয় একই। পাটে ৭০ শতাংশ সেলুলোজ আর কাঠে ৩০ থেকে ৩২ শতাংশ। সেই থেকে পাট নিয়ে কাজ শুরু করি।’

সে সময় সিনথেটিক বা কৃত্রিম আঁশের সঙ্গে পাট প্রতিযোগিতা করতে পারছিল না। বিশেষ করে কার্পেট তৈরির বেলায়। পাট পচনশীল, পানি লাগলে দুর্গন্ধ তৈরি করে। আবার ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করার পর এর সূক্ষ্ম আঁশ উঠে আসে। স্থিতিস্থাপকতাও কম। এটা কীভাবে সিনথেটিক তন্তুর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করলেন মোবারক আহ্​মদ খান। বললেন, ‘অনেকে বলেন সোনালি আঁশ পাট হারিয়ে গেছে। আমি বলি হারিয়ে যায়নি, প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেনি।’

১৯৯১ সালে দেশে ফিরে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে যোগ দিলেন এই বিজ্ঞানী। ‘আমরা কাজ শুরু করলাম পাটের সুতলি দিয়ে। পাটের আরেক দোষ, এর রং উজ্জ্বল নয়। পলিমারের সঙ্গে সরাসরি পাটকে মেশানো যায় না। তেজস্ক্রিয়তা (রেডিয়েশন) দিয়ে পাটের আঁশকে নতুনভাবে কিছু করা যায় কি না, তা দেখলাম। যেহেতু অ্যাপ্লায়েড রেডিয়েশন নিয়ে আমার কাজ, তাই থেকেছি দেশীয় সম্পদের মধ্যে।’ তখন এ গবেষণা বেশ সাড়া জাগায়।

তৈরি হচ্ছে সোনালি ব্যাগ। ছবি: কবির হোসেনবিদেশে গবেষণা, দেশে ফিরে আসা
জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব বার্লিনের অধ্যাপক জর্জ হেনরিকসনের সঙ্গে চিঠিপত্রে যোগাযোগ ছিল মোবারক আহ্​মদ খানের। ‘ড্যাড বৃত্তির মাধ্যমে হেনরিকসন ১৯৯৫ সালে আমাকে নিয়ে যান সেখানকার ইনস্টিটিউট অব নন মেটালিক ম্যাটেরিয়ালসে। সেখানে পলিমার ও পাট মেশাতে থাকলাম। বেশ সফলতা পেলাম। নতুন এক দিগন্ত তৈরি হলো। আগে পরিবেশবান্ধব এমন উপাদান তৈরিতে কার্বন বা গ্লাস ফাইবার ব্যবহৃত হতো, যা ছিল খুব ব্যয়বহুল।’ বললেন মোবারক খান।

দেশে ফিরে এসে আবার ১৯৯৮ সালে জার্মানির হামবুর্গ যান মোবারক আহ্​মদ খান। পাটের মিশেলে নতুন নতুন উপাদান বানাতে থাকেন। গাড়ির কাঠামো, দরজা তৈরি হলো। কাজের সুবিধার জন্য ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক ড্রাজেলের সঙ্গে গবেষণা করতে যান তিনি। ‘হাতে করে নিয়ে গেলাম আমাদের পাট। আমি তখন ঠিক করে ফেলেছি, পাট ছাড়া কিছু করব না।’ বললেন ড. মোবারক। সেখানে উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তি হয়। বিমানের ভেতরকার দেয়ালের উপাদান তৈরি শুরু করেন মোবারক আহ্​মদ খান। পাট দিয়েই। ‘হঠাৎ আমার মনে হলো, আরে আমি বিদেশে বসে কী করছি? আমার সব গবেষণা, আবিষ্কার তো এদের নামে চলে যাচ্ছে, এদের কাজে লাগছে।’ ২০০১ সালে ফিরে এলেন বাংলাদেশের নিজের কর্মস্থল পরমাণু শক্তি কমিশনে।

পলিথিনের বিকল্পের সন্ধানে ২০০২ সালে সরকার পলিথিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু বিকল্প ছাড়া এই প্রয়াস সফল হবে না, বলেছিলেন মোবারক আহ্​মদ খান। বলেই ক্ষান্ত হননি। বিকল্প হিসেবে প্রথমেই আসে স্টার্চের কথা। এটা পাওয়া যায় ভাত, ভাতের মাড়, আলু। এই উপাদান থেকে পচনশীল পলিথিন বা প্লাস্টিক তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু খাবার সংগ্রহ জটিল। আর অনেক দেশেই খাবার থেকে অন্য উপাদান তৈরি নিষিদ্ধ। ড. মোবারক বলেন, ‘গরু কিন্তু ঘাস ও ভাত দুটোই হজম করতে পারে। এখানে একটা রসায়ন রয়েছে। পাটে প্রচুর সেলুলোজ আছে, একে যদি পলিমারাইজ করা যায়, তবে কাজটা হতে পারে। আমার এক পিএইচডি ছাত্র ড. হারুণ এটা নিয়ে কাজ করলেন।’ সফল হলো গবেষণা।

২০১৬ সালে মোবারক আহ্​মদ খান প্রথমে পাট থেকে ব্যাগ তৈরি করলেন। পানিতে এর ক্ষতি হবে না, তবে মাটিতে মিশে যাবে। পাট মন্ত্রণালয় এই আবিষ্কার খুবই পছন্দ করল। এদিকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের মহাপরিচালক হিসেবে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে অবসর নিলেন মোবারক আহ্​মদ খান। ‘তৎকালীন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম আমাকে বিজেএমসির সঙ্গে কাজ করতে বলেন।’ ফেব্রুয়ারি মাসেই বিজেএমসির বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন ড. মোবারক। এখন ডেমরার লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে পাট থেকে প্লাস্টিক শিট ও ব্যাগ উৎপাদন চলছে। যদিও কিছুটা বেশি দাম এই ব্যাগের, কিন্তু পলিথিন বর্জ্য অপসারণে যে খরচ হয়, তার তুলনায় এর দাম কমই। বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়লে ব্যাগের দাম কমে আসবে। মোবারক জানালেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ব্যাগের নাম দেন ‘সোনালি ব্যাগ’।

জুটিন—পাট থেকে ঢেউটিনপাট থেকে টিন
২০০৮ সালে মোবারক আহ্​মদ খান আবিষ্কার করেন পাট থেকে ঢেউটিন। নাম দেন জুটিন। ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে ভাবলাম গাড়ি বা উড়োজাহাজের কাঠামো বানালে দেশের কোনো কাজে আসবে না। এখানকার চাহিদা কী? দেখলাম ঢেউটিনের চাহিদা বেশি।’ শুরু হলো গবেষণা, তৈরি হলো পাট থেকে ঢেউটিন। এটা তাপ কুপরিবাহী, ফলে জুটিনের ঘর শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হয়। এটিতে মরিচাও ধরে না, শব্দরোধীও এটি। আর হালকা, খরচ কম। এই জুটিন দিয়ে ঘরের ছাদ, চেয়ার–টেবিল, টাইলস, দেয়াল, পাকা পায়খানার প্যান, কুয়ার পাত সবই তৈরি হয়। ওজনে হালকা হওয়ায় পার্বত্যাঞ্চলে এর ব্যবহারও হচ্ছে।

মোবারক আহ্​মদ খান জানালেন, বুলেটপ্রুফ জুটিনও তাঁরা বানিয়েছেন। তা পরীক্ষা করেও দেখা হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো পাটের প্লাস্টিক বা টিনের মতো উপাদান তৈরিতে বিশেষ জাতের পাটের প্রয়োজন হয় না মোবারক আহ্​মদ খানের। পাটকলে বাড়তি পড়ে থাকা ঝুট বা ছাঁটা পাট দিয়েই কাজ করছেন এখন পর্যন্ত। এসব উপাদান তৈরিতে পাট মেশাতে হয় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ।
এখন হচ্ছে রেয়ন

তৈরি পোশাকশিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় ভিসকস সুতা বা রেয়ন। এটা কৃত্রিম। মোবারক আহ্​মদ খান পাট থেকে রেয়ন তৈরি করছেন। এর পরীক্ষামূলক ব্যবহারও শুরু হয়েছে। পলিমার বিদেশের চেয়ে তিন গুণ বেশি দামে এখানে কিনতে হয়। বিশেষ পণ্য তৈরির জন্য কম দামে পলিমার পাওয়া যায়, তবে এসবের খরচ কমে আসবে।

প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে আরও অনেক আবিষ্কার আছে মোবারক আহ্​মদ খানের। চিংড়ির খোসা দিয়ে বানিয়েছেন প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ, যা ফরমালিনের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিকের হাত থেকে বাঁচাবে। সামুদ্রিক শেওলা থেকে বানিয়েছেন উদ্ভিদের বৃদ্ধি সহায়ক সার, যাতে চা–গাছের উৎপাদন দ্বিগুণ করেছে, লালশাকের মতো সবজির উৎপাদন সময় অর্ধেক কমিয়ে এনেছে। গরুর হাড় থেকে তিনি আবিষ্কার করেছেন বিশেষ ধরনের ব্যান্ডেজ, যা পোড়া বা ঘায়ের ক্ষতে ব্যবহার করা যাবে। এমন আরও আবিষ্কার ও গবেষণা রয়েছে তাঁর।
বাণিজ্য মেলায় দর্শকের হাতে সোনালি ব্যাগ। ছবি: খালেদ সরকারশৈশবের কৌতূহল থেকে বিজ্ঞান গবেষণা

১৯৫৮ সালের ৩১ জানুয়ারি মানিকগঞ্জের ডাউলি গ্রামে জন্ম মোবারক আহ্​মদ খানের। নিজের পরিবার ও এলাকায় তিনি খসরু নামে পরিচিত। বাবা মু. মুহসিন খান ছিলেন প্রধান শিক্ষক। মা নূরজাহান গৃহিণী। মানিকগঞ্জ মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ সালে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৯৯১ সালে পলিমার রসায়নে পিএইচডি করেন। পরে জার্মানি, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কলেজে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু। ১৯৮৪ সালে যোগ দেন পরমাণু শক্তি কমিশনে। প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মহাপরিচালক হিসেবে এখান থেকে অবসর নেন। দেশের বেশ কিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন এই বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক জার্নালে অনেক গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে তাঁর। জাতীয় পাট পুরস্কার, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির স্বর্ণপদক, জাতীয় পরিবেশ পদকসহ বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। মোবারক আহ্​মদ খানের নাম যুক্তরাজ্যের প্রকাশনা হুজ হু–তে ছাপা হয়েছে ১৯৯৮ সালে।

জানালেন, ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের নানা বই পড়তেন আর সেখানে থাকা পরীক্ষাগুলো বাস্তবে করে দেখতেন। এ থেকেই তাঁর মধ্যে বিজ্ঞান গবেষণার প্রতি আগ্রহ জন্মে। ১৯৮৭ সালে জাহানারা বেগমকে বিয়ে করেন। স্ত্রী অগ্রণী ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক হিসেবে এখন প্রাক্​–অবসর ছুটিতে আছেন। এই দম্পতির ছেলে শাওক শব্দ প্রকৌশলী আর মেয়ে আরশী বিবিএ পড়ছেন।

‘আমি এখনো রাত একটা–দুইটা পর্যন্ত গবেষণার কাজ নিয়েই থাকি। সংসার পুরোটাই আমার স্ত্রী সামলেছেন। আগে মাছ ধরার শখ ছিল। এখন সেটাও নেই। ফুরসত পেলে বই বা জার্নাল পড়েই সময় কেটে যায়।’

মোবারক আহ্​মদ খান পরিবেশবান্ধব উপাদান আবিষ্কারে আরও গবেষণা করে যেতে যান। চান এসব আবিষ্কার বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে সবার হাতে পৌঁছে যাক। দেশি উপাদান দিয়ে মানবকল্যাণে ব্যবহার করা যায়, এমন আবিষ্কারের জন্য গবেষণাই করে যেতে চান মোবারক আহ্​মদ খান।

নতুন তিন আবিষ্কার

কথা চলতে চলতে চাকতির মতো গোলাকার তিনটি পাত্র টেবিলে রাখলেন বিজ্ঞানী মোবারক আহ্​মদ খান। বললেন, ‘এই তিনটি আমার একেবারে নতুন তিন আবিষ্কার। আপনাদেরকেই প্রথম বলছি।’

নতুন তিনটি আবিষ্কারও পাট থেকে। একটা হচ্ছে ‘সেলুলোজ ন্যানো ক্রিস্টাল (সিএনসি)’। এটি বেশ দামি। গ্রাম হিসেবে বিক্রি হবে এই বিশেষ স্ফটিক। এ উপাদান দিয়ে মানবদেহের কৃত্রিম অঙ্গ বানানো যাবে; যা এখন কার্বন ন্যানো ক্রিস্টাল দিয়ে বানানো হয়, এর দাম অনেক বেশি। তিন কেজি পাট থেকে এক কেজি সিএনসি তৈরি হবে। এটা ইস্পাতের চেয়ে ২২ গুণ বেশি শক্ত।
দ্বিতীয় আবিষ্কারের নাম ‘লিগনিন’। ওষুধ ও প্রসাধনশিল্পে হবে এর ব্যবহার। আরেকটি হলো ‘সেলুলোজ ন্যানো ফাইবার (সিএনএফ)’। এর ব্যবহার ওষুধশিল্পে।

তথ্য: প্রথম আলো

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৯মার্চ২০