পিপিআর বা ছাগলের প্লেগ রোগ

1069

%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97

পিপিআর ছাগলের ভাইরাসজনিত একটি মহামারী রোগ। পিপিআর রোগে আক্রান্ত হলে শতকরা ৮০-৯০ ভাগ ছাগলের মৃত্যু হয়। এই রোগটি সর্ব প্রথম ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে দেখা দেয়ার পর থেকে সারাদেশে এর প্রাদুর্ভাব রয়ে গেছে এবং ছাগল মারা যাচ্ছে।

পিপিআর রোগের বাহ্যিক লক্ষণসমূহ:

১। পিপিআর রোগ হলে আক্রান্ত ছাগল প্রথম দিকে ঝিম ধরে পিঠ বাঁকা করে দাঁড়িয়ে থাকে।
২। নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হতে থকে।
৩। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় (১০৫-১০৭ ডিগ্রি) ফারেনহাইট।
৪। ব্যাপকভাবে নিউমোনিয়া দেখা দেয়, সেই সাথে নির্গত শ্লেষ্মা দিয়ে নাকের ছিদ্র পথ বন্ধ হয়ে যায়।
৫। শেষের দিকে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হয় এবং মলের রং হয় গাঢ় বাদামী। এমনকি মাঝে মধ্যে রক্ত মিশ্রিত আম              থাকতে পারে।
৬। আক্রান্ত ছাগলকে সঠিক চিকিৎসা না দিলে ৪-৯ দিনের মধ্যে মারা যেতে পারে।

ছাগলের পিপিআর রোগ মুক্তকরণ মডেল মাঠ পর্যায়ে জরিপ:

মাঠ পর্যায়ে জরিপের মাধ্যমে ৫টি নির্বাচিত গ্রাম (পৌলি, চামটা, মধুখালী, মিশ্রিদিয়াড়া এবং বহিরামপুর) থেকে খামারীদের ছাগলের সংখ্যা, জমির পরিমাণ, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাসস্থান, টিকা প্রদান ও চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্যাবলী সংগ্রহ করা হয়েছিল। পিপিআর রোগ সম্পর্কে খামারীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ (পিপিআর রোগ, কৃমিমুক্তকরণ, স্বাস্থ্যবিধি, টিকা প্রদান) প্রদান, খামার পরিদর্শন, পোস্টার এবং লিফলেট বিতরণ করা হয়েছিল। সর্বমোট ৯৫২ জন খামারী উক্ত প্রকল্পের আওতাধীন ছিল।

পিপিআর টিকা প্রদান কর্মসূচী:

প্রাথমিক রক্ত নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার পর ২ মাস এবং এর উপরের বয়সী প্রায় পাঁচ হাজার ছাগলকে পিপিআর টিকা প্রদান করা হয়েছিল। প্রাথমিক সেরো-সারভিলেন্সে দেখা যায় টিকা প্রদানের পূর্বে উক্ত গ্রামগুলিতে পিপিআর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল ১১.৩৬% (পৌলি), ৪৫.৩৯% (মধুখালী), ৫৯.৭২% (মিশ্রিদিয়াড়া), ০% (চামটা) ও ৫৩.০৩% (বহিরামপুর) এবং ছাগলগুলির গড় পিপিআর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল ৩৩.৯০%। টিকা প্রদানের ২১ দিন পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল ৮৯.৪৭% (পৌলি), ৯৭.৮৭% (মধুখালী), ৯৫.১০% (মিশ্রিদিয়াড়া)। টিকা প্রদানের ৬ মাস পর গড় পিপিআর রোগ প্রতিরোধ ক্ষকতা ছিল ৯৩.৪৪%। এক বছর পরে গড় পিপিআর রোগ প্রতিরোধ ক্ষকতা ছিল ৮৬% পৌলি, ৮২.২৩% মধুখালী, ৮৯.৬৮% মিশ্রিদিয়াড়া। ২৪ মাস পর পিপিআর রোগ প্রতিরোধ ক্ষকতা পাওয়া যায়, পৌলি ৭৮%, মিশ্রিদিয়াড়া ৮১% এবং মধুখালী ৮২%। সুদীর্ঘ ৩০ মাস পর গড় রোগ প্রতিরোধ ক্ষকতা ছিল ৮৫%।

চলবে……..

সূত্রে: বিএলআরআই।