পুষ্টিতে ভরপুর লাউ

217

বাংলাদেশে জনপ্রিয় সবজির অন্যতম লাউ, যেটি এখন প্রায় সারাবছরই পাওয়া যায়। লাউয়ে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও নিকোটিনিক অ্যাসিড। এ ছাড়া আছে খনিজ লবণ, ভিটামিন বি-১, বি-২, আয়রনসহ আরও নানা উপাদান।

কম ক্যালরিসম্পন্ন লাউয়ের ৯৬ শতাংশ পানি। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার। তাই লাউ খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। এ কারণে লাউ ওজন কমাতে সহায়ক। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ।

লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার আছে। দ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং হজমসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এ ছাড়া নিয়মিত লাউ খেলে গলা ও বুক জ্বালা করা, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, অজীর্ণ ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। আর অদ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার পাইলসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

লাউয়ের মূল উপাদান পানি। তাই লাউ খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে এবং রাতে ভালো ঘুম হয়। গরমের দিনে লাউ খেলে শরীর ঠাণ্ডা হয়। এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে। ঘামে শরীর থেকে যে পানি ও খনিজ লবণ বের হয়ে যায়, তার অনেকটাই পূরণ করতে পারে লাউ। লাউয়ে প্রাকৃতিক প্রোটিন, ভিটামিন সি, আয়রন ফাইবারসহ অনেক উপাদান রয়েছে। তাই ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে লাউ। তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লাউ মুখে ব্রণের প্রবণতা কমায়। জ্বর, ডায়রিয়া ও অন্যান্য বড় ধরনের অসুখে শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে প্রচুর পরিমাণে লাউয়ের তরকারি খেতে পারেন। এতে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হবে। নিয়মিত লাউ খেলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা হলদে হওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

লাউয়ের মতো লাউশাকেও রয়েছে নানা উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ। এই শাক ফলিক অ্যাসিড-সমৃদ্ধ। ফলিক অ্যাসিডের অভাবে গর্ভস্থ শিশুর স্পাইনাল কর্ডের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়; এতে প্যারালাইসিস, মস্তিষ্ক বিকৃতি, অথবা মৃত শিশুর জš§ হতে পারে। লাউশাকে থাকা ভিটামিন সি ঠাণ্ডা-জ্বর, সর্দি ও যেকোনো ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। উচ্চ মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকায় এটি অস্টিওপোরেসিস ও অন্যান্য ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগের ঝুঁকি কমায়। লাউশাকে থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতা রোধে সাহায্য করে।