শাহাদাত হোসেন তৌহিদ, ফেনী থেকে: ফেনীতে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। জেলার ৬টি উপজেলায় মোট সরিষা চাষ হয়েছে ১ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের মতে, এ বছর সরিষার ভালো আবাদ হয়েছে যা থেকে বাম্পার ফলন আশা করা যাচ্ছে। এখন জেলার চারিদিকে কেবলই সরিষার হলুদ রাঙা মাঠ।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর জেলায় বারী-৯, বারী -১৪, বারী -১৫, বারী -১৭ এবং সম্পদ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। চলতি বছর প্রতি হেক্টর জমি থেকে ১ দশমিক ২৯ মেট্রিকটন সরিষা উৎপাদিত হবে বলে কৃষি বিভাগ প্রত্যাশা করছে। এ হিসাবে ফেনী জেলায় এ বছর মোট ৩৭ হাজার ৭শ ৫১ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হবে। যার বাজার মূল্য ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। দিন দিন সরিষা চাষ বাড়লে সারাদেশেই তেলের ঘাটতি মিটবে।
কৃষি বিভাগ সরিষা চাষে উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে প্রদত্ত প্রণোদনা হিসেবে জেলার ১ হাজার ৬শ ৮০ জন কৃষককে ইউরিয়া সার, বীজ ইত্যাদি বিনামূল্যে বিতরণ করেছে।
কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী সদর উপজেলায় ৮শ ৯০ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় ৯০ হেক্টর, ফুলগাজীতে ৬২ হেক্টর, পরশুরামে ৭৫ হেক্টর, দাগনভূঞায় ২০ হেক্টর ও সোনাগাজীতে ২শ ৮০ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়েছে। এবার জেলায় মোট ১৪শ ১৭ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। জেলায় মোট ১৮০টি প্রদর্শনী ক্ষেতে ১৫শ বিঘা জমির উপর এ প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।
কৃষক রতন চন্দ্র দাস বলেন, বিগত ১৫ বছর পাঁচগাছিয়ার উত্তর কাশিমপুর গ্রামের মাঠটি পতিত ছিল। সরকারি প্রণোদনা পেয়ে এবং কৃষি কর্মকর্তাদের অনুপ্রেরণাও তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তিনি আশা করেন প্রতি বিঘাতে ৫ হাজার খরচ করে তার ১৫ হাজার টাকা আয় হবে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রণব চন্দ্র মজুমদার বলেন, রবি মৌসুমে পতিত জমিতে সরিষা আবাদ করলে নিবিড়তা বাড়ে এবং এরপর বোরো ধান চাষ করলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু নঈম মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন জানান, এবার ৪৭টি প্রদর্শনী ক্ষেতে ৫১ বিঘা জমির উপর কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক সরিষা আবাদের পরিমাণ হচ্ছে সদর উপজেলায় ৮শ ৯০ হেক্টর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জয়েন উদ্দিন বলেন, জেলায় রবি মৌসুমে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমি পতিত থাকে। সরকার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তেল ও ডাল ফসল আবাদ বাড়ছে। এ বছর ১ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে। চলতি বছর ১ হাজার ৮শ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হবে বলে কৃষি বিভাগ প্রত্যাশা করছে। এছাড়াও কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণে সরিষা ক্ষেতের পাশে অসংখ্য মধু সংগ্রহকারী বাক্স স্থাপন করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন