বিদ্যুৎ ভবনের আঙিনায় বিষমুক্ত সবজি চাষ

469

মুজিববর্ষ উপলক্ষে কৃষি বিপ্লবের অংশ হিসেবে কৃষকদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে রাজশাহী জেলার চারঘাট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস চত্ত্বরে প্রায় তিন বিঘা পতিত জমিতে সবজি ও ফুল চাষ করা হয়েছে। ব্যাতিক্রমধর্মী উদ্যোগে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে শোভা পাচ্ছে ফুল ও সবজির সমারোহ।

করোনার আগেও এই জায়গাগুলো ছিল পতিত জমি। বর্তমানে সবজি ও ফুল চাষে বদলে গেছে দৃশ্যপট। চিরচেনা এ সবুজ দৃশ্য বিদ্যুৎ অফিসে সেবা নিতে আসা মানুষের নজর কেড়েছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা তাদের বসতবাড়ির পতিত জমিতে সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

চারঘাট জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালে কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে ‘এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে’ – প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুক্তার হোসেন গত বছরের জুলাই মাসে অফিস চত্ত্বরে প্রায় তিন বিঘা জমিতে এ সবজি ক্ষেত গড়ে তোলেন। এতে অর্গানিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হয়। বিষমুক্ত এবং সতেজ এসব সবজি দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চাহিদা মেটাচ্ছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে ইট পাথরে ঘেরা চত্বরে সবজি ও ফুলের সমারোহ। সেখানে ঢেড়স, টমেটো, বেগুন, লাউ, করোলা, পটল, মরিচ, লালশাক, ডাটাশাক, পুঁইশাক, ধনিয়া পাতা, পেঁপে, পুদিনাসহ প্রায় ২০ রকমের সবজি রয়েছে।

অপরদিকে শোভাবর্ধনকারী গোলাপ, মুসেন্দা, রঙ্গন, বেলি, চার ধরনের জবা, জুঁই, গন্ধরাজ, হাসনাহেনা, বাগানবিলাস, সাদা জিনিয়া, কসমস, সূর্যমুখী, পাতাবাহার, কৃষ্ণচূড়া, মাধবীলতা, ক্রিসমাস ট্রি, ফিজিয়াম, ডালিয়াসহ বিভিন্ন রকমের ফুল গাছ রয়েছে।

ডিজিএম ও দুজন শ্রমিকের পরিচর্যায় ছোট চারা বেড়ে উঠছে, ধরছে ফসল। ফুলের সুভাস ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। প্রতিদিন সূর্য ওঠার পর ডিজিএমের সাথে শ্রমিকরা ছুটে আসেন সবজি ক্ষেতে। শ্রমিকরা ক্ষেতে পানি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, নিড়ানি দেয়াসহ পরিচর্যায় সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করেন।

কৃষকদের বাড়ির আঙিনাসহ পতিত জায়গা খালি না রেখে সবজি চাষ করার আহ্বান জানিয়ে জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুক্তার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুয়ায়ী থানার পতিত জমিতে সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিষমুক্ত এসব সবজি বাজারের তুলনায় অনেক ভাল। নিজে ও জোনাল অফিসের সদস্যরা ছাড়াও আশেপাশের এলাকার লোকদের এসব সবজি বিতরণ করা হয়। তবে দেশের সরকারি-বেসরকারি সব অফিসের পতিত জমিতে এমন সবজি বাগান গড়ে তোলা যায়।

চারঘাট উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে তাদের পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার। তিনি বলেন, “ বিদ্যুৎ অফিসের এই উদ্যোগ একটি দৃষ্টান্ত। আমাদের পক্ষ থেকে সবজির রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়।”

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৫ এপ্রিল ২০২১